সোমবার, মে ২০, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাসিক নির্বাচন: ২০ প্রার্থী স্বশিক্ষিত

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) আসন্ন নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২০ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। এদের মধ্যে একজন মেয়র প্রার্থীও আছেন। অন্য ১৯ জনের মধ্যে ১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সাতজন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামায় এসব প্রার্থীরা শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় লিখেছেন, ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ অথবা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’। এদের মধ্যে কয়েকজন সিটি করপোরেশনের ২০১৮ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না থাকলেও কোনমতে স্বাক্ষর করা শিখেই তাঁরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই এবার নির্বাচনে তাঁরা আবারও প্রার্থী হয়েছেন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়রপ্রার্থী চারজন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৬ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ১১ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন ও সংরক্ষিত আসনের ছয়জন নারী।

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা সাধারণ ওয়ার্ডের ২১ ও সংরক্ষিত আসনের সাতজন প্রার্থীর। এছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাধারণ ওয়ার্ডের একজন চতুর্থ শ্রেণি এবং দুজন দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার তথ্য দিয়েছেন। সাধারণ ওয়ার্ডের অন্য ৩৭ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের অন্য ১৪ জন প্রার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা সমমান পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।

হলফনামা অনুযায়ী, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী দলটির মহানগরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপনের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। হলফনামায় তিনি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ লিখেছেন। অন্য তিন দলের তিন মেয়র প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত।

হলফনামায় যেসব কাউন্সিলর প্রার্থী ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ অথবা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ লিখেছেন তারা হলেন- ১১ নম্বরের প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর আবু বাক্কার কিনু; ১৭ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু; ২৩ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী; ২৪ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আরমান আলী; ২৬ নম্বরের প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও মখলেসুর রহমান; ২৭ নম্বরের প্রার্থী নুরুল হুদা সরকার, ১৮ নম্বরের মো. ভুট্টু ও মোখলেসুর রহমান মিলন; ৩ নম্বরের রফিকুল ইসলাম ও মো. শামিম, ৫ নম্বরের মাহাতাবুল ইসলাম এবং ৮ নম্বরের হারুন-অর-রশিদ।

সংরক্ষিত নারী আসনে ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ বা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ প্রার্থীরা হলেন- সংরক্ষিত আসন ৩ এর প্রার্থী ও এ আসনের বর্তমান কাউন্সিলর মুসলিমা বেগম বেলী, সংরক্ষিত আসন ১ এর প্রার্থী রেখা, ৮ এর পারভীন বেগম ও শিখা রায়; আসন ৬ এর মনজুরা বেগম, ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রেহেনা বেগম এবং ১, ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রওশন আরা ইসলাম।

‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ প্রার্থী আরমান আলী শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। তবে আমি পড়তে পারি। আমার কোন সমস্যা হয় না। আমি সবকিছু জানি বলেই পারি। জনগণও আমাকে নির্বাচিত করে। এ জন্য এবারও ভোট করছি।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন সাবেক কয়েকজন উচ্চশিক্ষিত জনপ্রতিনিধির উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আগে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতেন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা। এখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন মানুষও জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন। উচ্চশিক্ষিতরা কেন ভোটে আসছেন না, সেটা নিয়ে গবেষকেরা গবেষণা করতে পারেন। তবে একজন সৎ, যোগ্য এবং শিক্ষিত মানুষ জনপ্রতিনিধি হলে সমাজের জন্যই উপকার।’

তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২ জুন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে। প্রচারণা শেষে ২১ জুন ইভিএমের মাধ্যমে সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এই নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৪৫ জন।

সর্বাধিক পঠিত