শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহীতে তীব্র লোডশেডিং, অতিষ্ঠ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলে দিনরাত মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পেয়ে লোডশেডিং করছে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি। এদিকে রাজশাহী মহানগর এলাকাতেও দিনরাতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেডও একই কথা বলছে। এমন লোডশেডিংয়ের বিরূপ প্রভাব পড়ছে সবখানেই।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক সাবিয়ার রহমান বোরো ধান তোলার পর এখন আবার বীজতলা করতে চাচ্ছেন। এ জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ থেকে একঘণ্টা সেচের পানি দরকার। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে সোমবার সারাদিনেও পানি পাননি। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি পানি পেয়েছেন। সাইফুল জানান, কয়েকজনের সিরিয়ালের পর আমার পানি পাওয়ার কথা ছিল। একজনের পানি নেওয়া হচ্ছেই না বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এ জন্য সোমবার তিনি পানিই পাননি। মঙ্গলবার দুপুরে পানি পেয়েছেন।

গোদাগাড়ীর মান্ডইল গ্রামের বাসিন্দা তুহিন আলী বলেন, ‘দুইদিন ধরে ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। দিনে কিংবা রাতে কখন বিদ্যুৎ যাচ্ছে, কখন আসছে তার কোন ঠিক নেই। দিনরাতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। দিনে অসহনীয় গরম সহ্য করতে হচ্ছে। রাতেও গরমের কারণে নির্ঘুম থাকতে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, দিনে লোডশেডিং বেশি করে দিয়ে হলেও রাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া দরকার। তাহলে মানুষ একটু ঘুমাতে পারবে।

পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, মোহনপুর ও দুর্গাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। সমিতির রাজশাহীর মহাব্যবস্থাপক রমেন্দ্র চন্দ্র রায় জানান, এসব উপজেলায় রাতে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ মেগাওয়াট। অর্ধেক সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আর দিনে চাহিদা থাকে প্রায় ৬০ মেগাওয়াট। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট। বাকি সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীও। শহরের বিনোদপুর এলাকার গৃহিনী আনোয়ারা খাতুন জানান, দিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। একবার গেলে দুই-এক ঘণ্টার আগে আসছে না। রাতেও একাধিকার লোডশেডিং হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরেও ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। তিনি বলেন, ‘টাকাওয়ালা মানুষের সমস্যা নাই। তাদের বাড়িতে আইপিএস আছে। বিদ্যুৎ না থাকলেও ফ্যান চলছে। কষ্ট আমাদের মতো গরীব মানুষের।’

নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশীদ জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে তারা গ্রাহকপর্যায়ে সরবরাহ করেন। রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৪৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া গেছে ৩৭৬ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ৪৩৬ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাওয়া গেছে ৮৮৬ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘কয়লার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। এ সংকট আরও তিন সপ্তাহ থাকতে পারে। তারপর কয়লা এলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। এ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

সর্বাধিক পঠিত