শনিবার, মে ১৮, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার : দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় এ উপলক্ষ্যে নগরীর ভেড়িপাড়া মোড় হতে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে পুলিশ লাইন্সে এসে শেষ হয়। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আইজিপি বেলুন-ফেস্টুন ও কবুতর অবমুক্ত করার মাধ্যমে ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।

পরে সকাল এগারোটায় আরএমপি কমিশনারের সভাপতিত্বে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আইজিপি আরএমপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কাটেন এবং ‘নবচেতনায় আরএমপি’ স্মরণিকার মোড়ক উম্মোচন করেন। এরপর তিনি আরএমপি’র উদ্যোগে তৈরিকৃত বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষী হাজির ব্যবস্থাপনা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সফটওয়্যার উদ্বোধন করেন। পরে আরএমপি’র ৩০ বছরের ইতিহাস ও সাফল্য তুলে ধরে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭৫’র ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্য, শহিদ জাতীয় চার নেতা, শহিদ ডিআইজি মামুন মাহমুদ, শহিদ পুলিশ সুপার শাহ্ আব্দুল মজিদ-সহ সকল শহিদ বীর পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বক্তৃব্য রাখেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্মার্ট পুলিশ’-এ পরিণত করার লক্ষ্যে নিয়েছি বহুমুখী পরিকল্পনা। তাঁর সানুগ্রহে বাংলাদেশ পুলিশের জনবল ও সক্ষমতা যেমন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি উন্নততর প্রযুক্তি ও সর্বোত্তম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আইজিপি রাজশাহীস্থ পুলিশ ইউনিটগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহীস্থ পুলিশের রয়েছে অসামান্য অবদান এবং বর্তমানেও তারা জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। ভবিষ্যতে ঠিক একইভাবে সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাবে।

এক সময় বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ভয়াবহ প্রকোপ ছিল উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ পুলিশ তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করেছে।

অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডল। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পুলিশেও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ শনাক্তকরণে আরএমপি-তে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট ও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব এবং মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগরীর সর্বত্র সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে, যা অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। হ্যালো আরএমপি অ্যাপস-এর মাধ্যমে মহানগরবাসী তাদের অভিযোগ যেন পুলিশ কমিশনারের কাছে জানাতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

যেকোনো ক্রাইসিস মোকাবিলায় সিআরটি টিম ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে বলে এসময় তিনি উল্লেখ করেন।

মাদক নির্মুলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শূন্য সহিষ্ণুতার নীতির বাস্তবায়নে আরএমপি নিয়মিত ও বিশেষ অভিযান অব্যাহত রেখেছে তুলে ধরে তিনি বলেন, মাদক উদ্ধারসহ যেকোনো অপরাধ শনাক্তকরণে আরএমপি’র রয়েছে দৃশ্যমান সাফল্য। অপরাধ প্রতিরোধে গত ৫ বছরের ছিনতাইকারী, চোর, ডাকাত ও কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা প্রস্তুত করে নিবিড়ভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং-এর মাধ্যমে মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জনগণ ও শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে বিভিন্ন রকমের জনসচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করছে আরএমপি।

বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ও জামিনে থাকা জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আরএমপি’র বিভিন্ন থানায় হাজিরার ব্যবস্থা সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে বলে তিনি জানান।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর প্রিন্সিপ্যাল মীর রেজাউল আলম, বিপিএম (বার), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: গোলাম সাব্বির সাত্তার, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আব্দুল খালেক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো: আব্দুল বাতেন, বিপিএম, পিপিএম, রাবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: হুমায়ুন কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল-সহ আরএমপি ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং কমিউনিট পুলিশিং-এর সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার প্রধান অতিথি-সহ আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।

সর্বাধিক পঠিত