রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

এক মেরুতে থাকা বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’

অনলাইন ডেস্ক: যা হারানোর তা হারিয়ে গেছে অনেক আগে। যা পাওয়ার তা কেবল পড়ে আছে সামনে। ২০২৩ বিশ্বকাপকে ঘিরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনাল খেলা। কিন্তু এশিয়ার দুই দেশ এতোটাই বাজে পারফর্ম করেছে যে, নিজেদের লক্ষ্য থেকে তারা ছিটকে গেছে বহুদূর।

শ্রীলঙ্কা তবুও মন্দের ভালো। ৭ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে আছে সাত নম্বরে। বাংলাদেশ ৭ ম্যাচে ১ জয়ে নয়ে। এই দুই দলের বিশ্বকাপের ম্যাচকে ঘিরে কোনো উন্মাদনা থাকার সম্ভাবনা আছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল দিল্লির আইসিসির এক কর্মকর্তার কাছে? যা বললেন তাতে দাঁড়ায়, এই ম্যাচটা আইসিসির জন্যই গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে!

১৮৮৩ সালে চালু হওয়া দিল্লির এই স্টেডিয়ামে ভারত ম্যাচের পর গ্যালারি একদমই ভরেনি। কাল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার অগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটায় গ্যালারি ফাঁকা থাকবে ধরেই নিয়েছে আয়োজকরা। কে দেখবে? সেটাই বিরাট এক প্রশ্ন। সমর্থকদের কাছে এই ম্যাচকে ঘিরে তেমন আগ্রহ না থাকলেও দুই দলের জন্য বিরাট গুরুত্বের। অর্থহীন ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পেছনে বড় কারণ, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিটের নিশ্চয়তা।
বিশ্বকাপে পয়েন্ট টেবিলে আটে থাকতে পারলে পাকিস্তানে টুর্নামেন্ট খেলার টিকিট মিলেবে। আয়োজক হিসেবে পাকিস্তান সরাসরি খেলবে। বাকি থাকবে সাতটি জায়গা। সেই লড়াইয়ে টিকে থাকতে দুই দলের জয়ের বিকল্প নেই শেষ দুই ম্যাচে। এশিয়ার এই দুই দলের লড়াইকে ঘিরে যে উত্তেজনা, রোমাঞ্চ তা কেবল দুই ড্রেসিংরুমেই সীমাবদ্ধ। সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না কেউ-ই।

বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এখনও সুযোগ আছে। আমরা এখনও একটা ভালো দল। আমরা জানি, আমরা যেমন খেলছি তার চেয়েও আমরা ভালো একটা দল। এখনও নিজেদের সেরা ম্যাচটা খেলতে পারিনি। এমনকি সেরার ধারেকাছেও যেতে পারিনি। আমরা এখনও মনে করি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলার সুযোগ আমাদের আছে।’
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসও একই সুর বাঁধলেন, ‘আমরা একদমই ভালো পারফর্ম করিনি। কিন্তু আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা সেজন্য আত্মবিশ্বাসী। আগীমাকলের ম্যাচে ভালো করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

দুই দলের ম্যাচকে ঘিরে আয়োজকদের মাথায় ভিন্ন একটি কারণে চিন্তার ভাঁজ। দিল্লির বায়ুদূষণ। গত কয়েকদিন দিল্লির বায়ুদূষণ চরমমাত্রায় পৌঁছছে। দুই দল একটি করে অনুশীলন সেশন বাতিল করে। শ্রীলঙ্কা আইসিসির কাছে জানতেও চেয়েছে, পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তারা। আয়োজকদের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসুরক্ষার নিশ্চয়তা পেয়েই মাঠে নামার অপেক্ষায় লঙ্কানরা। বাংলাদেশও সতর্ক অবস্থায়। খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সকল ব্যবস্থা নিয়েছে বিসিবি।

মাঠে নামার আগে শেষ প্রস্তুতিতে আজ ৮ জন অনুশীলনে এসেছিলেন। আগের দিন অনুশীলন না করা লিটন ব্যাটিংয়ে লম্বা সময় নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন। সাকিব নিজের দুর্বল জায়গা শর্ট বল নিয়ে আজও কাজ করেছেন। শান্ত, মুশফিকের অনুশীলনও ছিল প্রাণবন্ত।

দিল্লির এই মাঠে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রান উৎসব করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। ৭৫৪ রানের ম্যাচ হয়েছিল যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪২৮ এবং শ্রীলঙ্কা ৩২৬ রান করেছিল। চার ছক্কা হয়েছিল যথাক্রমে ৭৪ ও ৩১টি। সেই একই উইকেটে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মাঠে নামতে যাচ্ছে। আগামীকালই এই মাঠে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ। দেশের রাজধানীতে চার-ছক্কার উৎসবের সমারোহের কী দেখা মিলবে? উত্তর জানতে আরও একটি দিন অপেক্ষা করতে হবে।

তবে একই মেরুতে থাকা দুই দল জয় পেতে মরিয়া। ফলে প্রবল হাড্ডাহাড্ডি, তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ একটি ম্যাচ হবে আশা করাই যায়। শেষ তিন ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে না পারা বাংলাদেশ হারের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারবে? দিল্লির এই মাঠে ২০১৯ সালে স্বাগতিকদের হারানো বাংলাদেশ একটু আত্মবিশ্বাস তো পেতেই পারে। অন্যদিকে আগের ম্যাচে ৫৫ রানে অলআউট হওয়া শ্রীলঙ্কা কিছুটা পিছিয়ে থাকবে বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই সুযোগটিই নিতে হবে বাংলাদেশকে।

সর্বাধিক পঠিত