চারঘাট প্রতিনিধি : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মরত সহকারী সার্জন ডা: আতিকুল হককে নারীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছে রাজশাহীর একটি আদালত। গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় আত্মসমর্পন করে জামিনের জন্য হজির হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ডা: আতিককে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় চিকিৎসকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
চিকিৎসকদের দাবি এ ভাবে চিকিৎসক হয়রানীর শিকার হলে চিকিৎসা দিতে অনিহা তৈরী হবে চিকিৎসকদের মাঝে। ডা: আতিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা, বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্র মুলক মামলা প্রত্যাহারসহ তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে ৪২তম বিসিএস ক্যাডার পরিবার নামের একটি সংগঠন। এ ছাড়াও চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিতৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতালের সামনে এ মানবন্ধন কর্মসুচি পালন করেন। এসময় ডা: আতিকুল হকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্র মুলক মামলা প্রত্যাহারসহ তাকে দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো হয়। অন্যথায় ডাক্তাররা কঠোর কর্মসুচি ঘোষনা করবেন বলে হুশিয়ারী উচ্চারন করেন।
চিকিৎসকরা বলেন, চিকিৎসকরা সব সময় মানব সেবায় নিয়োজিত থাকেন। নিজেদের জীবনের ও পরিবারের মায়া ত্যাগ করে রোগীকে সুস্থ্য করে তুলতে দিনরাত পরিশ্রম করে একজন মুমুর্ষ রোগীকেও সুস্থ্য করে তোলেন। আর সেই চিকিৎসকককে যখন একটি মিথ্যা, বিভ্যান্তিকর ও ষড়যন্ত মুলক ভাবে অপবাদ দেয়া হয়। আর যখন কোন বিচার পাওয়া যায় না। উল্টো চিকিৎসককেই জেলে যেতে হয়। তখন সেবা দিয়ে লাভ কি? প্রশ্ন চিকিৎসকদের।
চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা: আশিকুর রহমান বলেন, ডা: আতিক একজন মানবিক চিকিৎসক। করোনা মহামারীর সময় করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির স্পর্শে যেতে পরিবারের লোকজনই যখন ভয় পেয়েছে। সেখানে ডা: আতিক নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা না করে জীবনের ঝুকি নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেছেন। আর সেই চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে ডা: আতিক দুবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এমন একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন ন্যাক্কার জনক অপবাদ দেয়া চিকিৎসকরা আজ মর্মাহত। দ্রুত এ ধরণের মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্র মুলক মামলার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ডা: আশিকুর রহমান। এসময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন,ডা: রিয়াদ আলী, ডা: আফজাল হোসেন প্রমুখ।
প্রসঙ্গ, গত প্রায় ৮মাস পুর্বে উপজেলার গোপালপুর এলাকার জনৈক ব্যাক্তির স্ত্রী রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতে স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেয়ার অভিযোগ তুলে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সহকারী সার্জন ডা: আতিকুল হককে আসামী করে একটি মমলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ডা: আতিক এখন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।