স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের এই তিন মেয়াদে বিএনপিসহ অন্য মতের বহু নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। এই সরকার প্রধান বিনা ভোটের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পেটয়া বাহিনী এই সকল গুম করেছে। এর এক দুইজন ফেরত আসলেও আর কারো হদিস নেই। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় রাজশাহী মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল পূর্ব সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু এই কথা বলেন।
বুধবার বিকেলে রাজশাহী মহানগরী ঐতিহাসিক ভূবনমোহন পার্কে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মিনু আরো বলেন, এই সরকারের ভীত নড়ে গেছে। এখন শুধু পড়ে যাওয়ার পালা। কারণ বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্র এই সরকারেক ঘৃনা করে। এই বিনা ভোটের সরকারের কারণে দেশে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। দেশে ভাবমুর্তি বিশ্বের দরবারে ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে সুনাম। কারণ এই সরকার নিজের গতি টিকিয়ে রাখতে র্যাব ও পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে এ গুম করিয়েছে। সেইসাথে তাদের নিয়ে কোথায় রেখেছে কেউ জানে না। এছাড়া গণতন্ত্র বিসর্জন এবং দিনের ভোট রাতে করায় সরকারের অনেক মন্ত্রী, আমলা ও আইনশৃংখাবাহিনীর সদস্যর উপরে সেংশন দিয়েছে। কিছু সদস্যর কারণে পুরো বাহিনী এই কলঙ্কে হয়েছে।
তিনি বলেন বাংলাদেশেল হাই কোর্ট বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এই ফরমায়েশি রায় মানে না। বিএনপি’র সদস্যদের একবিন্দু রক্ত শরীরে থাকা পর্যন্ত তারেক রহমানের বক্তব্য এদেশে চলতে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৬০০-এর বেশি মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, তরুণ, যুবক, ছাত্র, সাংবাদিক ও অধিকার গ্রুপের লোকজন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১০০ জনের মতো মানুষের লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং দীর্ঘদিন পর অনেককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন পর ফেরত এসেছে। এখনও অসংখ্য গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। এক্ষেত্রে প্রায় সবারই দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়েই তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি পুলিশ সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, এই সরকারের দিন শেষ। তাদের তাবেদারী না করে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানান।
এখনো সময় আছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বিএনপি’ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করে গণতান্ত্রিক সসরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি। সেইসাথে গুম হওয়া সকল ব্যক্তির সন্ধান দেয়ার জন্য দাবী জানিয়ে চলমান আন্দোলনে অটুট থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বক্তব্য শেষে ভূবনমোহন পার্কের সামনে থেকে মুখে কালো কাপড় বেধে নেতাকর্মীরা মৌন মিছিল শুরু করে। তারা মিছিল নিয়ে সোনাদিঘী মোড় হয়ে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসে মিছিল শেষ করেন। মিছিলে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়। মিছিল ও মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ^নাথ সরকার, জেলা বিএনপি’র সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক রানা, জয়নাল আবেদিন শিবলী, শফিকুল ইসলাম শফিক, বজলুল হক মন্টু।
আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সদস্য আব্দুস সামাদ, জাহান পান্না, রায়হানুল আলম রায়হান, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল হোসেন রাজু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সভাপতি ও রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান সজন, সিনিয়র যুগ্ম, আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকো, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক ও সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার আমিন বিপুল, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক শরফুজ্জামান শামীম ও জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব আকুল হোসেন মিঠু।
এছাড়াও মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম টুকটুকি, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট রওশন আরা পপি, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সকিনা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রোমেনা হক, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি, মহানগর তাঁতী দলের আহ্বায়ক আরিফুল শেখ বনি, জেলা তাঁতী দলের সদস্য সচিব হাসানুজ্জামান হাসান, রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ ও রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহম্মেদ রাহিসহ বিভিন্ন জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।