অনলাইন ডেস্ক: চার বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। তবে তার আগে ২৫৪ রানের পুঁজি সংগ্রহ করতে পেরেছে দলটি। মিরপুরের স্লো উইকেটে এই রান পার করতে বাংলাদেশের যে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে, তা বিগত সময়ের ম্যাচগুলো দেখা যেকোনো টাইগার ভক্ত বুঝতে পারবেন।
দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে টস জিতে আজ আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক লোকি ফার্গুসন। তবে বাংলাদেশি পেসারদের বোলিং তোপে টপ অর্ডার ব্যাটাররা ভালো করতে না পারলেও মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের কাঁধে ভর করে স্কোরবোর্ড সম্মানজনক রান জড়ো করতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। শেষের দিকে বোলাররা বেশকিছু রান যোগ করলে ৪৯.২ ওভারে ২৫৪ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। ফলে জিততে ২৫৫ রান করতে হবে লিটন দাসের দলকে।
টস হেরে বোলিংয়ে নেমেই কিউই ব্যাটারদের চেপে ধরেন মোস্তাফিজ ও হাসান মাহমুদ। একের পর সুইংয়ের মধ্যে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাফল্যের দেখা পায় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের বাউন্সার কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হন উইল ইয়াং। আট বল খেলে রানের খাতা না খুলেই বিদায় নিতে হয় তাকে।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পান মোস্তাফিজ। তার অফসাইডের বাইরের একটি ডেলিভারিতে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে থাকা সৌম্যর হাতে ধরা পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ফিন অ্যালেন।
অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আসেন ওয়ানডেতে অভিষিক্ত খালেদ। ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়ে যান তিনি। খালেদের বলটি উড়িয়ে মেরেছিলেন চ্যাড বাওয়েস। তবে সীমানা পার হওয়ার মতো জোর পায়নি শটটি। পলে স্কয়ার লেগ থেকে ক্যাচটি লুফে নেন তাওহীদ হৃদয়। বাওয়েস ১৯ বলে ১৪ রান করে ফিরলে নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন দাঁড়ায় তিন উইকেটে ৩৬ রান।
এখান থেকে দলকে টেনে ওঠানোর চেষ্টা করেন হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। দেখেশুনে খেলে ধীরগতির ইনিংস শুরু করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন দুজনই। তাদের ব্যাটেই ২০.১তম ওভারে দলীয় একশ’ পূরণ হয় কিউইদের। ৫৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশত করেন ব্লান্ডেল। অবশ্য পরের ওভারেই হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা নিকোলস অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। খালেদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৪৯ রান করেন তিনি। ২৬.২তম ওভারে ১৩১ রানে চতুর্থ উইকেট পড়লে নিউজিল্যান্ডের ৯৫ রানের জুটি ভাঙে।
পরে রাচিন রবীন্দ্রকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শেখ মেহেদী। এই স্পিনারের মিডল স্টাম্প বরাবর করা বলটি ব্যাকফুটে গিয়ে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন রাচিন। তবে ব্যাটে-বলে না হওয়ায় বল সোজা আঘাত করে তার পেছনের পায়ে। শুরুতে মেহেদীর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলেও জোরালো আবেদনের পর আঙুল তোলেন তিনি। ফলে ১০ রান করেই ফিরতে হয় এই কিউই ব্যাটারকে।
এরপর একপাশ আগলে থাকা ব্লান্ডেলকে দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। তাতে শেষ হয় ব্লান্ডেলের ৬৮ রানের ইনিংস।
মুস্তাফিজের করা ৩৮তম ওভারের শেষ বলে মিড অফে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান কোল ম্যাকনকি। পরের ওভারে বল করতে নাসুম এসে প্রথম বলেই তাকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান।
অষ্টম উইকেটে ফের রানের গতি বাড়াতে থাকেন লো অর্ডার ব্যাটাররা। কাইল জেমিসন ও ইস সোধি দুপাশ থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। এই দুজনের ব্যাটে আড়াইশ’ পেরুনো স্বপ্ন দেখে কিউইরা। অবশ্য ২০ রান করেই শেখ মেহেদীর বলে ফিরতে হয় জেমিসনকে।
৪৬তম ওভারে অভানীয় এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ওভারের তৃতীয় বলটি ছোড়ার আগেই উইকেট থেকে খানিকটা বেরিয়ে গিয়েছিলেন ইস সোধি। সেই সুযোগে বল থ্রো না করেই স্টাম্প ভেঙে দেন হাসান। আম্পায়ারও তাকে মানকাড আউট দিয়ে দেন। পরে অধিনায়ক লিটন দাস আউটের আবেদন তুলে নিয়ে সোধিকে আবারও ব্যাটিংয়ে ফেরার আমন্ত্রণ জানান।
ইনিংসের শেষদিকে লোকি ফার্গুসন ১২ বলে ১৩ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশে মাথাব্যথা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দেয়। পরে শেখ মেহেদীর বলে ফ্রট ফুটে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন ফার্গুসন।
অবশেষে ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে খালেদ আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সোধি। তার ৩৯ বলে ৩৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসের সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে কিউইদের ইনিংসেরও সমাপ্তি ঘটে।
এদিন তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী ও খালেদ আহমেদ; মোস্তাফিজ নিয়েছেন দুটি উইকেট।