ফয়সাল আজম অপু, : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার মুক্তাশা রোডের আলহেরা ক্লিনিকে আবারও রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সিজারিয়ান অপারেশন করাতে এসে মারা গেছেন এক গৃহবধূ। রোগীর স্বজনদের সাথে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এ ঘটনা দফারফা করেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামের সোলাইমান আলীর স্ত্রী জোহরা বেগম (২৩) শনিবার বিকেলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় তার অপারেশন করেন ওই ক্লিনিকের সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ডাঃ শামীম রেজা।এ সময় রোগীর এনেস্থিসিয়া করেন ডাঃ জাকারিয়া হাবিব। অস্ত্রপচারের কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হলেও ক্লিনিক কতৃপক্ষ তা গোপন করে তাকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করে । পরে তার মৃতদেহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে গোমস্তাপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, রোগীর স্বজনদের কোন অভিযোগ না করায় রোববার সকালে লাশ তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। রোগীর স্বজনরা জানান, ওই গৃহবধূর সদ্যজাত সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমরা ক্লিনিক কতৃপক্ষের সাথে সমঝোতা করে নিয়েছি। উল্লেখ্য, গত১৮ আগস্ট এ ক্লিনিকে পিত্তথলির অপারেশন করাতে এসে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে আলহেরা ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী জানান, যথাযথ নিয়ম মেনে ওই গৃহবধূর অপারেশন করা হয়। শ্বাসকস্টের কারণে তার মৃত্যু হয় বলে তিনি জানান। তবে মৃত প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে চার লাখ টাকায় সমঝোতা হয়েছে বলে বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে অপারেশনে অংশ নেয়া ওই চিকিৎসক দ্বয়ের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল হামিদ জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেনঅভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম মাহমুদুর রশীদ জানান, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।
এদিকে স্বাস্থ সংশ্লিষ্টদের অভিমত,জেলার ক্লিনিকগুলোয় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় প্রায়ই রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনা ঘটলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নিচ্ছে। এছাড়া কারও কোন অভিযোগ না হওয়ায় স্বাস্থ্য বা আইন বিভাগ এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নিতে পারছে না।