স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ ৭ বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। তবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার দেড় মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত যুবলীগের রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ইউনিটে কমিটি দেওয়া হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী মহানগর যুবলীগ নেতৃত্বশূন্য থাকায় এরই মধ্যে নতুন করে কোন্দল-সংঘাত দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে মহানগর যুবলীগের দুই পদপ্রত্যাশী নেতা এবং তাদের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন অনুষ্ঠানের দেড় মাসেও যুবলীগের কমিটি না হওয়ায় মহানগর যুবলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা আগে থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথকভাব পালন করে আসছে। এজন্য যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদযাপনের কর্মসূচি পালনে পদপ্রত্যাশীদের মাঝে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে আগের দিন শুক্রবার রাতে তিনজন পদপ্রত্যাশী নেতাকে নগরীর রাণীবাজারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডেকে কর্মসূচি পালনে সময় ভাগ করে দেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
ওইদিন (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই বৈঠক থেকে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের নিচে নামলে মহানগর যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী তৌরিদ আল মাসুদ রনির সমর্থকদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মাজেদুল আলম শিবলীর সমর্থকদের প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর উভয় গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। উভয় গ্রুপের মধ্যে মারামারির সিটিটিভি ফুটেজের একটি ভিডিও গত শনিবার (১১ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, নগরীর রাণীবাজারে অবস্থিত ওই কার্যালয়ে বৈঠক শেষে একে একে পদপ্রত্যাশী তিন নেতার কর্মী-সমর্থকরা বের হয়ে আসছেন। বের হওয়ার সময় এক পক্ষকে ভবনের নিচতলায় সিঁড়ির সামনে জটলা করতে দেখা যায়। আরেক পক্ষ বের হলে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কিল-ঘুষির শিকার হন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মারামারির এই ঘটনায় গত শনিবার উভয়পক্ষই নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মোট ৪টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে সভাপতির পদপ্রত্যাশী রনি গ্রুপের পক্ষ থেকে তিনটি এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী শিবলী নিজেই থানায় একটি জিডি করেছেন।
জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মাজেদুল আলম শিবলী বলেন, রনির লোকজন অনেকটা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝামেলা বাঁধিয়েছে। যেহেতু মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষণা হয়নি তাই আমরা যারা পদপ্রত্যাশী রয়েছি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পৃথকভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু তারপরেও আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
জানতে চাইলে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ও আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি বলেন, শিবলী বহিরাগত কিছু লোক নিয়ে এসে ইচ্ছা করে ঝামেলা করেছিল। মূলত লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে শিবলীর লোকজন এই হট্টগোল করেছে।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, মাজেদুল আলম শিবলী তার দায়ের করা জিডিতে তৌরিদ আল মাসুদ রনিসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ৫৫ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। আর অপর তিন জিডিতে মাজেদুল আলম শিবলীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যুবলীগের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে চারটি জিডি করেছেন। সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।