অনলাইন ডেস্ক: গাজার আল শিফা হাসপাতাল খালি করার নির্দেশের পর ডাক্তার ও চিকিৎসাকর্মীর পাশাপাশি হাসপাতাল ছাড়ছে অসহায় শত শত রোগী। কিন্তু হাসপাতাল কম্পাউন্ড থেকে বের হলেই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
হাসপাতাল থেকে বের হলেই নারীদের বিবস্ত্র করে তল্লাশি করছে ইসরাইলি সেনারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা ইসরাইলি সেনাদের এই আচরণকে ‘খুবই অবমাননাকর’ বলে অভিহিত করেছেন।
গাজায় আগ্রাসনের ধারাবাহিকতায় গত বেশ কয়েকদিন ধরে উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফা হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইলি সেনারা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অভাবে এরই মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে চরম বিপাকে পড়ে রোগী ও এখানে আশ্রয় নেয়া কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ।
গত ১৫ নভেম্বর আল শিফা হাসপাতালের ভেতরে হামলা চালায় ইসরাইল। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) হাসপাতালটির পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, ইসরাইলি বাহিনী কাউকে ঢুকতে বা বের হতে না দেয়ায় হাসপাতালটি একটি ‘বড় কারাগার’ এবং ‘গণকবর’ হয়ে উঠেছে।
আল জাজিরাকে সালমিয়া বলেন, ‘আমাদের কিছুই নেই। জ্বালানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পানি নেই। প্রতিমুহূর্তে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গত তিন দিন ধরে হাসপাতালটি অবরোধে রাখা হয়েছে।’
এরপর শনিবার (১৮ নভেম্বর) হাসপাতালটি এক ঘণ্টার মধ্যে খালি করার নির্দেশ দেয় ইসরাইলি সেনারা। তাদের এই নির্দেশের পরই ভয়ে ও আতঙ্কে হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করে আশ্রিত মানুষগুলো।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে আল শিফা হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। আল্টিমেটামের পর এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালটি এখন প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। ‘সাদা পতাকা’ হাতে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করছে বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হাসপাতালের ইনকিউবেটরে কয়েক ডজন শিশুসহ মুমূর্ষু শত শত রোগী ছিল। তারা এখন হাসপাতালের চত্বরে ও করিডোরে পড়ে আছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় রোগীদের বিশেষ করে নারীদের আটকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক জিহাদ আবু শানাব বলেছেন, ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল ছাড়ার সময় তাদেরকে প্রায় উলঙ্গ করে তল্লাশি করা হয়েছে।
ওই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘এছাড়া অনেককে অত্যন্ত অবমাননাকরভাবে দেহ তল্লাশি করা হয়েছে। নারীদের তাদের কাপড় খুলতে বাধ্য করা হয়েছে। এটা খুবই অবমাননাকর ঘটনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের অনেককেই হাসপাতালের ওপর তলায় জিম্মি করা হয়েছে। তাদের খাদ্য, পানি দেয়া হচ্ছে না। তাদের সাথে অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ করা হচ্ছে।’