অনলাইন ডেস্ক: বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার বিশ্বনাথকে এখন চেনা কঠিন। যারা আগের বিশ্বনাথকে দেখেছেন তারা চিনতে পারছেন না। দিনকে দিন নিজেকে নতুন রূপে মেলে ধরছেন বিশ্বনাথ। একটা সময় এই ডিফেন্ডার খেলার নানা ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলতেন।
যেখানেই গণ্ডগোল সেখানেই বিশ্বনাথ। অন্যের ঝামেলা নিজের ঘাড়ে নিয়ে হলুদ কার্ডের শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। বিশ্বনাথ নিজের পজিশন থেকে দৌড়ে গিয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছেন। রেফারি হয়তো দুজনকে কার্ড দিচ্ছেন। বাড়তি কার্ডের শাস্তি মাথায় নিতে হলো বিশ্বনাথকে।
ক্লাব ফুটবল কিংবা জাতীয় দলের খেলা, সব ক্ষেত্রেই বিশ্বনাথ যেন ক্লাসের ব্যাডবয়। তার মা গ্রামে থাকেন। তিনিও নাকি বিশ্বনাথের মাঠের আচরণে অখুশি ছিলেন। মাঠে নিজেকে ভদ্র ছেলে হয়ে খেলতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। চেষ্টা করেছেন বিশ্বনাথ।
কিন্তু অনেক দিনের অভ্যাস থেকে নিজেকে ফিরিয়ে আনতে কষ্ট করতে হয়েছে। মাথা ঠিক রাখতে পারতেন না। খেলায় একটু ঝামেলা হলেই ছুটে গিয়ে কিছু একটা করে বসতেন। ব্যাডবয় থেকে গুডবয় বিশ্বনাথ। এখন আর ব্যাডবয় বলা যাবে না।
গত পরশু গোপালগঞ্জে স্বাধীনতা দিবস ফুটবল ফাইনালে মোহামেডান-বসুন্ধরা কিংস লড়াই। খেলার ২০ মিনিট না যেতেই উত্তেজনা শুরু হয়। খেলার শেষ বাঁশির আগপর্যন্ত উত্তেজনা ছিল। রেফারি জালাল উদ্দিনকে ৭টা হলুদ কার্ড এবং ১টা লালকার্ড দেখাতে হয়েছে।
৮ কার্ডের প্রত্যেক বার ঝামেলা পোহাতে হয়েছে রেফারিকে। কার্ডের বাইরেও অনেক বার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যেক ঘটনাস্থলে বিশ্বনাথকে ঝামেলা থামাতে দেখা গেছে। কার দোষ, কে দোষী, সেটা না ভেবে ঝামেলা মুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
কখনো মোহামেডানের ফুটবলারকে ধরে সরিয়ে দিয়েছেন। কখনো নিজ দলের খেলোয়াড়কে জাপটে ধরে সরিয়ে দিচ্ছেন। রেফারির দিকে কেউ তেড়ে গেলে, ওভারল্যাপ করে উদ্যাত খেলোয়াড়কে নিভৃত করার চেষ্টা করেছেন উইংব্যাক বিশ্বনাথ।
গতকাল বিশ্বনাথ বললেন, ‘একটা হাই ভোল্টেজ ম্যাচ সবাই চায় জিততে। রেফারি যদি একটা ভুল করে সেটার প্রভাব খেলোয়াড়ের মধ্যে পড়ে। তখন ভালো খেলাটা খারাপ হয়ে যায়। ভালো কিছু মাথায় থাকে না।
নিজের খেলাটা নষ্ট হয়ে যায়। আগে আমার টেম্পারমেন্ট হাই থাকত। আমি এখন গেঞ্জাম-ফ্যাসাদে যাই না। এখন মাঠে আমার ডিউটি হচ্ছে গণ্ডগোল থামানো।’
বিশ্বনাথের নিজের পারফরম্যান্সেও এখন অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। প্রতিপক্ষ দেশি কিংবা বিদেশি, সব ম্যাচেই বিশ্বনাথের খেলা চোখে পড়ছে।
ডিফেন্স থেকে আক্রমণভাগে, উইংয়ে গিয়ে বলটাকে ক্রস করে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ফেলার কাজ করেন বিশ্বনাথ। মাঠে এখন পরিশ্রমী ফুটবলারের নাম বিশ্বনাথ ঘোষ।