স্টাফ রিপোর্টার: গভীর রাতে রাজশাহীর বেসরকারী মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে নগরীর দেবিসিংপাড়ায় অবস্থিত নার্সিং ইনস্টিটিউটটির প্রধান ফটক, অফিস কক্ষ এবং শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সকালে ক্যাম্পাসে গিয়ে ভবনের ভেতর ঢুকতে না পেরে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রাস্তায় অবস্থান নেন। তালা দেওয়ার কারণে বুধবার প্রতিষ্ঠানটিতে কোন ক্লাস হয়নি।
এই নার্সিং কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে টাঙ্গাইলের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরোধ রয়েছে।
তিনি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে জড়িয়েছিলেন। এই নার্সিং ইনস্টিটিউট যে ভবনে সেখানে তার একটি অংশের মালিকানা রয়েছে। এসপির লোকজনই নার্সিং ইনস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মনিরুজ্জামান বাবুল বলেন, ‘এটি সামাজিক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এভাবে রাতের অন্ধকারে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা কোনোভাবেই আইনসিদ্ধ নয়।
তিনি আইনের লোক হয়ে দীর্ঘদিন থেকেই এভাবে বেআইনি কাজ করে আসছেন। তিনি এখনও ভবনে ফ্ল্যাটের মালিকানা স্বত্ব পাননি। তার অভিযোগ যে, আমরা ভাড়া দিই না।
তিনি আদালতে মামলাও করেছিলেন। কিন্তু ইতোমধ্যেই আদালত মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। এবার প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়েছেন। ঘটনাটি মৌখিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছে। আমরা লিখিত অভিযোগ করব।’
তালা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাসায় তারা ভাড়া থাকে। ২৪ লাখ টাকা ভাড়া বাকি। এর আগেও স্বাক্ষর জালিয়াতির একটি মামলা রয়েছে। অনেকবার টাকা-পয়সা চাইলেও তারা সেই টাকা দিচ্ছে না।’
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, ওই ভবনের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
তবে ইনস্টিটিউটে তালা দেওয়ার ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আমি একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবো।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে টাঙ্গাইলের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী।
এর আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের মালিকানা দাবি ও উদ্যোক্তাদের হয়রানি করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তাকে গুরুদণ্ডের (বেতন কমানো) সাজা দেয়।
চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নার্সিং ইনস্টিটিউটটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে জড়িয়ে সেটি দখলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।