স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী এ আসনের টানা তিনবারের এমপি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তানোর-গোদাগাড়ীর পথে-প্রান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন এ অভিনেত্রী। শুক্রবার দুপুরে তানোরের কলমা এলাকায় প্রচারণায় গিয়ে তিনি কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এ সময় মাহিয়া মাহি বলেছেন, সিনেমার চৌধুরী সাহেবকে তিনি ভোটের মাঠেও দেখতে পাচ্ছেন।
মাহি বলেন, ‘সিনেমার চৌধুরী সাহেবরা যেমন অহংকারী থাকেন, মানুষকে শোষণ করেন, শাসন করেন, সিনেমার চৌধুরী সাহেবরা যেমন চরম লেভেলের খারাপ মানুষ হন, আমি বাস্তবেও সেটার প্রমাণ পাচ্ছি।
সিনেমার চৌধুরী সাহেবদের যেমন গরীব-মেহনতি মানুষরা ভয় পায়, তাদের সামনে কথা বলা তো দূরের কথা; থর থর করে সামনে কাঁপে, সামনেও যেতে পারে না। ঠিক সে রকমই এই মাঠে দেখতে পাচ্ছি।’
তবে এতে ভয় পাচ্ছেন না জানিয়ে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘পর্দার চৌধুরীরাও যেমন নায়ক-নায়িকাদের কাছে পরাজিত হয়, এই তানোর-গোদাগাড়ীর মাঠেও এ রকম অহংকারী চৌধুরী সাহেবের কোন ভ্যালু নেই। কারণ, জনগণ চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে নেই।’
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়েও এ সময় কথা বলেন মাহি। বলেন, ‘বেশিরভাগ দেয়ালে আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানো আছে।
সরকারী খাম্বায় পোস্টার লাগানো আছে। গাছে পেরেক দিয়ে লাগানো আছে। এগুলো তো আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে।
আমি জানি না এখানে যারা কর্মকর্তারা আছেন, তারা চেক করছেন আমি জানি না। আমার গাড়িতে স্টিকার লাগানো ছিল, এসিল্যান্ড বললেন যে এটা আচরণবিধির মধ্যে পড়ে। আমি সাথে সাথে লোক দিয়ে খুলিয়ে ফেলেছি।
কিন্তু আমাদের চোখের সামনে দিয়ে, তাদের সামনে দিয়ে অসংখ্য গাড়ি যাচ্ছে স্টিকার লাগানো। আমার মনে হয় আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। এটা আমি করলে আরও একটা শোকজ খেয়ে যেতাম।’
ভোটের প্রচারণা প্রসঙ্গে মাহি বলেন, ‘প্রত্যেকটা আনাচে-কানাচে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত কম সময়ে সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব না। আমার জন্য এটা ভীষণ রিস্কি বিষয়।
কারণ, যেখানে যাচ্ছি না সেখানকার মানুষ বলছে, কী আমাদের এখানে আসবে না! আমরা ভোট দিব না। এ রকম একটা ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। ভয় পেয়ে সেখানে আবার যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া। মা-বোনদের খুব সাড়া। তাদের কথা হচ্ছে তারা একটা নারী প্রতিনিধি চায় তাদের পক্ষ থেকে। যারা বয়োবৃদ্ধ আছেন, একেকজন কেঁদে দিচ্ছেন। বিগত দিনে তারা যত কষ্ট পেয়েছেন, তারা এ থেকে পরিত্রাণ চান।’
নির্বাচনে কোন চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই আছে। এত বিজ্ঞ বিজ্ঞ প্রার্থী আছেন। আমি তাদের কাছে চুনোপুটি।
কিন্তু তবুও আমি এবার দেখতে চাই, নিশ্চয় তানোর-গোদাগাড়ীতে এবার জনপ্রিয়তার যাচাই হবে। দেখি সেটার দৌড়ে কতটুকু এগোতে পারি।’
মাহিয়া মাহি এ দিন তানোরের কলমা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে প্রচারণা চালান। এই কলমা ইউনিয়নেই এ আসনের বর্তমান এমপি ও নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি।