• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

মারা যাওয়ার পর ইউটিউবে স্বপ্ন পূরণ হলো ফিলিস্তিনি শিশুর

প্রকাশ: রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ৮:১২

মারা যাওয়ার পর ইউটিউবে স্বপ্ন পূরণ হলো ফিলিস্তিনি শিশুর

অনলাইন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শিশু আউনি এলদৌস মারা যাওয়ার পর তার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। গত বছরের আগস্টে ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল গাজার বাসিন্দা এই শিশু। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে হাসতে হাসতে একটি স্বপ্নের কথা জানায় ভিডিওতে। ইউটিউবে তার গেমিং চ্যানেল নিয়ে ছিল সেই স্বপ্ন।

সে জানায়, ‘‘আমি আমি গাজার ফিলিস্তিনি এক বাসিন্দা। বয়স ১২ বছর। এই চ্যানেলের লক্ষ্য হল সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এক লাখ কিংবা ৫ লাখ কিংবা দশ লাখে পৌঁছানো।’’ ভিডিওটি শেষ করার আগে দৃশ্যের বাইরে যাওয়ার জন্য এক হাজার সাবস্ক্রাইবারের জন্য শান্তি কামনা করে সে।

এক বছরের কিছু বেশি সময় পর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত প্রথম ফিলিস্তিনি শিশুদের একজন হয়ে ওঠে গাজার আউনি।

স্বজনরা বলছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের বন্দুকধারীরা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সেদিনই আউনিদের বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান আঘাত হানে।

আউনির সেই ভিডিওটি এখন ৪০ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে। তার রেসিং, যুদ্ধ ও ফুটবল গেমের অন্যান্য ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন। আর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছেন।

এক বছরের কিছু বেশি সময় পর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত প্রথম ফিলিস্তিনি শিশুদের একজন হয়ে ওঠে গাজার আউনি
বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুনঃ  ইউএসএইডকে ভারতে সৎ বিশ্বাসে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল: জয়শঙ্কর

ফুফু আলা’আর কাছে আউনি ছিল ‘‘অত্যন্ত সুখী এবং আত্মবিশ্বাসী শিশু।’’ কম্পিউটারের প্রতি ভালোবাসার কারণে পরিবারের আরেক সদস্য তাকে ‘‘ইঞ্জিনিয়ার আউনি’’ বলে ডাকতেন। অন্যদের কাছে ১৩ বছর বয়সী এই গেমার গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারানো শিশুদের প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ইউটিউবে আউনির একটি ভিডিওর নিচে একজন কমেন্টে লিখেছেন, দয়া করে আমাদের ক্ষমা করে দিও। তোমার মৃত্যুর আগে যদি তোমার সাথে পরিচয় হতো!

গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তাদের এক তৃতীয়াংশের বেশিই শিশু। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গাজাকে শিশুদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা বলে অভিহিত করেছে।

হামাসের হামলার দিনই ইসরায়েল পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে। আলা’আ সেদিনের কথা কল্পনা করে বলেন, কেবল একটি বোমা গাজা শহরে তার পরিবারের বাড়িটি ধ্বংস করে দেয়।

ওই দিন রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তার ফোনের লাইট জ্বলে ওঠে। এতে বন্ধুদের কাছ থেকে আসা ক্ষুদেবার্তা দেখতে পান তিনি। আউনিদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।

উপত্যকার জেইতুন বসতি এলাকার তিনতলা একটি ভবনের প্রতি তলায় আউনির পরিবারের লোকজন বাস করতেন। আউনি ওই ভবনের একটি তলায় তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে থাকতো। পরিবারে তার বড় দুই বোন ও দুই ছোট ভাইও ছিল।

আরও পড়ুনঃ  কিডনি বিকল রোগে ভুগছেন অসুস্থ পোপ ফ্রান্সিস

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত অক্টোবরে ইসরায়েলি বিমান হামলার যে তথ্য নথিভুক্ত করেছে, তাতে আউনিদের বাড়িতে হামলার রেকর্ডও রয়েছে।

আউনির চাচা মোহাম্মদ বলেন, হঠাৎ দুটি বোমা ভবনের ওপরে পড়ে। এতে ভবনটি ধ্বংস হয়ে যায়। আমার স্ত্রী এবং আমি ভাগ্যবান যে, আমরা বেঁচে গিয়েছি। কারণ আমরা ওপরের তলায় ছিলাম।

এক প্রতিবেশী ও তিনি বলেন, তারা ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে কোনও ধরনের সতর্কবার্তা পাননি। অনেকটা আকস্মিক বিস্ফোরণ ঘটে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নির্দিষ্ট এই বিমান হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে তারা গাজা উপত্যকায় হামাসের সামরিক স্থাপনা ও ঘাঁটিতে হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে।

মোবাইল ফোনে পাওয়া বার্তা কোনোভাবে বিশ্বাস করতে চাননি আলা’আ। কিন্তু ফোনে ওয়াই-ফাই সংযোগ চালু করার পর তিনি পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে তার ভাইয়ের একটি ছবি ক্যাপশনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে দেখেন। ছবির ক্যাপশনে তার আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। এই ছবির দেখার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যান আলা’আ।

বর্তমানে দক্ষিণ গাজায় বাস্তুচ্যুত অবস্থায় বসবাস করছেন আলা’আ। সেখান থেকে ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘‘তারা আমাকে মৃতদেহ দেখতে বলেছিলেন। কিন্তু আমার স্বামী রাজি হননি। তিনি চেয়েছিলেন, আমি যেন তাদের বেঁচে থাকাকালীন সুন্দর মুখগুলো স্মৃতিতে ধরে রাখি।’’

আরও পড়ুনঃ  ইউক্রেন শিগগিরই খনিজ চুক্তি মেনে নেবে, আশা ট্রাম্পের

আলা বলেছেন, সেই রাতে তার পরিবারের ১৫ সদস্যকে হত্যা করা হয়; যাদের মধ্যে আউনিও ছিল। তিনি আউনিকে শান্ত, উপকারী ছেলে হিসেবে বর্ণনা করেন। তার বাবা একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।

আলা’আ বলেন, যতটুকু মনে আছে, আউনি তার বাবাকে কপি করতো। ল্যাপটপ খুলে আলাদা আলাদা করতো, তারপর আবার সেটা ঠিক করার চেষ্টা করতো।

আউনি ইউটিউবে তার চ্যানেলটি চালু করেছিল ২০২০ সালের জুনে। ভিডিওগুলোতে তাকে প্রো ইভোলিউশন ফুটবল, গাড়ি প্রতিযোগিতার গেম ব্লার এবং শুটিং গেম কাউন্টার-স্ট্রাইক খেলতে দেখা যায়।

দীর্ঘ ক্যাপশনে গেমগুলোর বিশদ বিবরণ দেওয়া থাকতো। এতে যেসব কোম্পানি সেগুলো তৈরি করেছিল তাদের পরিচয় ও গেম রিলিজের তারিখ উল্লেখ করতো সে।

তার আশা ছিল একদিন এই চ্যানেলে লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার হবে। সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ তার ভিডিও দেখবেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, কিন্তু জীবিত অবস্থায় যা দেখে যেতে পারে নাই গাজার এই শিশু।

তার মৃত্যুর পর চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার ও ভিউ সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অনেকেই আউনির আত্মার শান্তি কামনা করছেন।

আলা’আ বলেন, ‘‘সারা বিশ্বের অনেক মানুষ আউনিকে ভালোবাসেন। এটা সৃষ্টিকর্তার উপহার। নিজের চ্যানেল সম্পর্কে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে কথা বলতো আউনি। এখন স্বর্গে আরও বেশি সুখী সে।’’

সর্বশেষ সংবাদ

‘জন্মদিনে মা পছন্দের খাবার রান্না করতেন’
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ৩:১৫
বিয়ে করলে কাজ কমবে না, ২১ বছরেই সংসার শুরু অনন্যার
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ৩:১৫
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675