অনলাইন ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার পর আটক সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তির দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।
শনিবার গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অ্যারেস্ট যাদের করা হয়েছিলো তাদের মধ্যে যারা পরীক্ষার্থী ছিলো তাদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে আমি এটাও নির্দেশ দিয়েছি, এর ভেতরে যারা নিরীহ আছে, ছাত্র যারা…যারা একেবারে খুনের সঙ্গে জড়িত না, ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে জড়িত না তাদেরকে মুক্তি দেওয়া শুরু করবে। এবং সেটা শুরু হয়েছে। যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করে…ঠিক তারা থাকবে। কিন্তু বাকিরা যাতে মুক্তি পায় সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।
এর আগে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্য গণভবনের দরজা সবসময় খোলা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় যে পুলিশ সদস্য জড়িত তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিচারবিভাগীয় যে তদন্ত কমিশন করেছিলাম, আমি কারও অপেক্ষায় থাকিনি। আমি চাই যারা এর সঙ্গে জড়িত সে যেই হোক, পুলিশই হোক বা অন্য যে কেউ হোক, যারা অস্ত্রধারী এ ধরনের ঘটনা ঘটায় সকলেরই তদন্ত হোক বিচার হোক। তদন্ত কমিশনের সদস্য দু’জন বাড়িয়ে কর্ম পরিধি বাড়ানো হয়েছে। যাতে যথাযথভাবে তদন্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কয়টা জায়গায় এসব জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে সবকটা ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ বিচার হবে। আমি চাই এ ধরনের অন্যায় বা হত্যাকাণ্ড যারাই ঘটাক… তারাতো আমার দেশের নাগরিক। সে পুলিশ হোক, একটা শিশু হোক, একটা মানুষ হোক, সন্ত্রাসী হোক, ডাকাত হোক বা ছাত্র হোক যাই হোক এদেশের নাগরিক। এর যথাযথ তদন্ত করে এর বিচার হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অবশ্যই বিচার করা হবে। স্পষ্ট করে বলি, সে যেই হোক অবশ্যই তাদের বিচার করা হবে। যারা জড়িত তদন্ত করেই তাদের বের করা হবে। যারা অস্ত্রধারী, যেমন রংপুরে একটা ঘটনা ঘটেছে। যে পুলিশ দায়ী তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। তার বিচার হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রস্তাবিত পেনশন ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবিতে আয়োজিত গণমিছিলে পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার অভিযোগ এসেছে। এর প্রতিবাদে শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে এ ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শুক্রবার রাতে গণভবনে এক জরুরি বৈঠকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে দলের তিন নেতাকে দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন নেতার একটি টিম করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। এই টিমে ১৪ দলীয় জোটের জ্যেষ্ঠ নেতাদের যুক্ত করারও নির্দেশনা দেন তিনি।