স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমেই শপথ নিতে হবে যে, কখনো আর কেউ কোনো অপরাধে জড়াবে না। বাড়ি গিয়ে মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বড়দের ভালো কাজের সঙ্গেও থাকতে হবে। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে রাজশাহীর বিভিন্ন মামলার ৩৭ শিশু আসামিকে এসব ভালো কাজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের আদেশে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা আগামী ছয়মাস এই শিশুদের পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রতি দুই মাস অন্তর তিনি আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে শিশুদের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করবেন। পরে তাঁর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর শিশু আদালত-২ এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এ আদেশ দেন। ৩০টি মামলায় মোট ৩৭ শিশুর ব্যাপারে এ আদেশ দেন আদালত। শিশু-কিশোর আসামি বলে তাদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে আদালত ব্যতিক্রমী এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাসরিন আখতার মিতা।
তিনি জানান, মোট ৩০টি মামলায় এই ৩৭ জন শিশুর ব্যাপারে আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, বাগমারা, বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় এই ৩০ মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলার মোট ৩৭ শিশু আসামির মধ্যে আদেশের সময় আদালতে ২৬ জন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে ২৫ জন ছেলে ও একজন মেয়ে। মাদকদ্রব্য বহন, মারামারি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ চেষ্টাসহ বিভিন্ন লঘুদণ্ডের মামলা আছে এদের বিরুদ্ধে। আদেশের সময় ১১ জন অনুপস্থিত থাকলেও আদেশ সবার জন্য প্রযোজ্য বলে আদালত আদেশে বলেছেন।
তিনি আরও জানান, এই ৩৭ শিশুর সবার জীবনেই এটি প্রথম মামলা ছিল। আর কোনো দিন অপরাধে জড়াবে না শপথ পাঠসহ তাদের ভালো কাজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশের এই বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তাকে দেখভাল করতে বলা হয়েছে। শিশুরা আগামী ছয় মাস তাঁর পর্যবেক্ষণে থাকবে। প্রবেশন কর্মকর্তা দুই মাস পর পর আদালতে প্রতিবেদন দেবেন। আগামী বছরের ১৫ মে শিশুরা আদালতে হাজির হবে। সেদিন প্রবেশন কর্মকর্তার প্রতিবেদন দেখে আদালত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করবেন।
রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মতিনুর রহমান বলেন, বিকল্প পন্থায় এসব শিশুদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন আদালত। শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আদালত একটি ভালো আদেশ দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, শিশুরা ভালোভাবে চলাফেরার পাশাপাশি দুটি করে ভালো কাজও করবে। কে কোন ভালো কাজ দুটি করবে তা ওই শিশুদের অপরাধের ধরন দেখে ঠিক করে দেওয়া হবে বলেও জানান প্রবেশন কর্মকর্তা।