স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আওয়ামী কর্মীরা দুইজন ব্যক্তির ওপর অতর্কিত হামলা করেছে বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন বীরকয়া দক্ষিণ পাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মহসিন এবং আব্দুস সামাদের ছেলে আশরাফুল। তাঁরা দু’জনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বীরকয়া প্রাইমারি স্কুলের পাশে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, মন্দিয়াল গ্রামের মৃত বুধাইয়ের ছেলে জাবেরের নির্দেশে জাহিদ হাসান আকাশ, মোজাম্মেল হক ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে আজ সকাল ৯টায় এই দুজন ব্যক্তির ওপর হামলা করে।
এই হামলা সম্পর্কে ভুক্তভোগী মহসিন জানায়, জাবের একজন আওয়ামী লীগ কর্মী। সাবেক এমপি কালামের ডান হাত। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন জোরপূর্বক অবৈধভাবে সুদের ব্যবসা, জমি দখল, জাল টাকা প্রস্তুতকারক, পুলিশের হান্ডকাফসহ পালাতক আসামি সহ বিভিন্ন ভয়ংকর কর্মকাণ্ডের ক্ষমতাধর ব্যক্তি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরোধী শক্তি এই জাবের । বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েও এখনও তাঁরা অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বীরকয়া দক্ষিণ পাড়ার জালালের চায়ের স্টলে সকাল সাড়ে ৭টার সময় চা স্টলে গল্প করছিলাম। সেই সময় আমাদের ইঙ্গিত করে মন্দিয়াল গ্রামের জাবেরের জামাই মোজাম্মেল হক অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। সেসময় আমাদের ওপর দলবদ্ধভাবে আক্রমণের চেষ্টা করলে আমরা কোন প্রতিবাদ করিনি সেখান থেকে চলে যাই। সকাল ৯টায় বীরকয়া বটতলী বাজারে আমরা দুজন যাওয়ার সময় পথিমধ্যে মোজাম্মেল হকের ডাকে মন্দিয়াল গ্রামের জাবেরের ছেলে জাহিদ হাসান, সাহারের ছেলে জাহাঙ্গীর, আবুলের ছেলে কুদ্দুস, কালাম ফকিরের ছেলে হাবিবুর, সেলিম, আপার ছেলে গোলাম এবং বীরকয়া গ্রামের সামসুদ্দি, মজিদ, আমলেক, সাইদুর, রায়হান, গোলাম, সাজদুর, জাহাঙ্গীর, কামাল, কালিকাপুর গ্রামের লালচাঁনসহ ২০/২৫ জন আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, হাতুড়ি, রামদা, বাঁশের লাঠি, রড পাইপ হামলা করে। এরা মেয়েদের ওপর হামলা ও মারপিট করে। মেরে জখম করার এক পর্যায়ে মারা গেছি ভেবে তাঁরা ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আমাদের দুজনকে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী আশরাফুল হক বলেন, আমাকে এতটাই নির্মমভাবে আঘাত করেছে যে, অপারেশনের সময় আমার প্রায় ৩৮ থেকে ৪৪টি সেলাই লেগেছে। আমরা আইনের আশ্রয় নেব। এর আগে তাঁদের নামে মামলা হয়েছে তারপরও এখনও তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এদিকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে জাবেরের ছেলে জাহিদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার পুকুরের মাছ বিক্রি করে আমার বোন জামাই মোজাম্মেল হক বাড়ি ফিরছিলেন। এমন সময় আশরাফুল ও মহসিন মিলে বোন জামাই মোজাম্মেল হকের কাছে থাকা মাছ বিক্রির ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা ছিনতাই করে। নিজেরা নিজেদের শরীরের আঘাত করে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বানোয়াট কথাবার্তা এবং টাকা ছিনতাইসহ বোন জামাইকে বেইজ্জত করার বিচার চাই। এজন্য দু-একদিনের মধ্যে থানার শরণাপন্ন হবো।
এবিষয়ে বাগমারা থানার ওসি বলেন, ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছি। তবে, এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।