স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বাংলাদেশে যখন উন্নয়ন দৃশ্যমান, দেশ দ্রুত উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় দেশের উন্নয়নকে স্তব্ধ করার জন্য চক্রান্ত করছে বিএনপি। যারা বলছে, বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে, ডলার নেই, বাংলাদেশের আমদানি করার মতো অর্থ নেই, তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে।
বিএনপির ‘দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে রোববার বিকেলে রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নগরীর বিমান চত্বরে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। পরে নওদাপাড়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দ পলিসি নিয়েছেন, দুইদিন বা তিনদিন আগে সমাবেশের মাঠে গিয়ে পিকনিক করার মতো সবাই এক জায়গায় জমায়েত বসিয়ে কোথাও হাড়িতে রান্না হচ্ছে, কোথাও গান-বাজনা হচ্ছে, কোথাও গল্প-আড্ডা হচ্ছে। এই যদি আপনাদের (বিএনপির) রাজনীতি হয়, ওই রাজনীতি আপনারা করতে থাকেন। ইনশাল্লাহ এসব করে আমাদের পশমও ছিড়তে পারবেন না।’
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন। নেত্রী শেখ হাসিনা বদন্যতায় তাকে বাসভবনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি নড়তে পারেন না, চড়তে পারেন না, একজন অসুস্থ্য মানুষ। বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী তিনি ১১ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ চালাবেন এটি কী বিশ্বাস যোগ্য? তার সন্তান লন্ডনে বসে আছে। মানি লন্ডারিং কেসে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আর খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি। দুইজনই ইতোমধ্যে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হয়ে গেছেন। তারা এসে বাংলাদেশে কী নির্বাচন করবেন, কীভাবে ক্ষমতা নেবেন, এটি আমাদের বোধগম্য নয়।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বগুড়া, রাজশাহী জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়টা লোক আনতে পারে, কয় লক্ষ লোক আনতে পারে সেটা আমরাও দেখতে চাই। কারণ অতীতেও আমরা দেখেছি, মাদ্রাসা মাঠের ওই রাস্তাটায় তারা ঠিকমতো ভরাট করতে পারে না।
মেয়র লিটন বলেন, তারেক জিয়া লন্ডবে বসে বর্তমান বিশ্বকাপে জুয়াতে ইংল্যান্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছেন নিজেকে জুয়ারী হিসেবে। যে কুলাঙ্গার প্রকাশ্যে নিজেকে জুয়ারী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেয়। তাকে বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নিতে পারে? পারে না।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে বসবাস করে মির্জা ফখরুলেরা তাদের লোকদের মাধ্যমে লন্ডনে, মালয়েশিয়া, সৌদে আরবে আমাদের প্রবাসী ভাইদের , যারা রেমিটেন্স পাঠান ব্যাংকিং চ্যানেলে, সরকারের আয় হতো, তারা তাদের উসকানী দিয়ে বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে দিলে কম টাকা পাওয়া যাচ্ছে, ডলারে ৭/৮টা বেশি পাওয়া যাবে হুন্ডি করে টাকা পাঠালে। তারা কী দেশপ্রেমিক হতে পারে? তারা দেশের ক্ষতি করছে, প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়ের প্ররোচিত করছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। নির্বাচন হতে দিবো না।’ এটি বিএনপি ও তাদের সঙ্গে যারা আছে তাদের কথা। দেশটা কি বিএনপি-জামায়াতের বাপ-দাদার তালুক? যে তাদের কথায় চলবে? সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। উচ্চতর আদালত থেকে রায় এসেছে যে, আর কেয়ারটেকার সরকারের দরকার নেই। উন্নত বিশ্বে ভারত, ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশে ক্ষমতাসীন সরকার বহাল থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেইভাবে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা তাদেরকে আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তাদের সব কথাতেই না। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই না বলা। সেই না না এখনো চলছে। ওই না‘য়ে বাংলাদেশ থেমে নেই। বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
শাহমখদুম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আখতারুল আলমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। সঞ্চালনা করেন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শাহু।
উপস্থিত অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোহেল, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী প্রমুখ।