সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক স্থানীয় সরকার দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও বলেছেন, ‘একজন শিশু যখন দেশের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে তখন সে দেশের সম্পদে পরিণত হয়। তার ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব তখন রাষ্ট্রের। এই শিশুদের নির্যাতন ও বাল্যবিবাহের কারণে দেশের মুখ যেন মলিন না হয়’।
আজ (১৯ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা তথ্য অফিস কর্তৃক জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত শিশুর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক জেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ইউনিসেফের আর্থিক সহায়তায় ‘শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও বলেন, ‘শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধ করা সম্ভব হবে না। যার মাথা তার ব্যথা। যার সন্তান তাকেই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে। আর আমরা যারা বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজ করছি তাদেরকে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।’
পরামর্শ সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুজ্জামান। ধারণাপত্রে তিনি জানান, বাংলাদেশে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় এবং বিশ্বে আমাদের অবস্থান সপ্তম। আর দেশের মধ্যে পিরোজপুরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাল্যবিবাহ হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এখানে বাল্যবিবাহের হার ৬৫ শতাংশ। এসময় তিনি বাল্যবিবাহের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জনসংখ্যা, অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন খাতের সমস্যা তুলে ধরেন এবং বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন।
জেলা তথ্য অফিসার রূপ কুমার বর্মণের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম সাহিদ।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচারণা বাড়ানো, জন্মনিবন্ধনে বয়স পরিবর্তন রোধ, জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতি বাড়ানো, সরকারী প্রণোদনার ব্যবস্থাসহ বিবিধ সুপারিশ পেশ করেন।
অনুষ্ঠানে সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, ইমাম, পুরোহিত এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।