এস কে সুরের লকার থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার, ইউরো ও স্বর্ণালংকার জব্দ

এস কে সুরের লকার থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার, ইউরো ও স্বর্ণালংকার জব্দ

অনলাইন ডেস্ক : দিনভর নাটকীয়তার মাধ্যমে শেষ হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) গোপন লকার খোলার কার্যক্রম।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তার লকারে অভিযান চালিয়ে এক কেজি সোনা, ১ লাখ ৬৯ হাজার ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সবমিলিয়ে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। টানা ১০ ঘণ্টার অভিযান শেষে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কাজী সায়েমুজ্জমান বলেন, দুদকের অনুমোদন ক্রমে এসকে সুরের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য থাকায় তার সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি হিসাব জমা দেননি। এজন্য আমরা তার সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য তার বাসায় অভিযান চালাই। অভিযানে তথ্য পাওয়া যায় তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকারে মালামাল রয়েছে। তার ভিত্তিতে আদালতের অনুমোদন ক্রমে রোববার ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে তল্লাশি করতে এসেছি। সারাদিন তল্লাশি শেষে এক কেজি ৫ গ্রাম সোনা, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পেয়েছি। যেসব এফডিআর পাওয়া গেছে তা তার নামে নয়। যেসব অ্যাকাউন্টে আছে তা আমরা যাচাই করব।

আরও পড়ুনঃ  বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

তিনি বলেন, আমরা যা পেয়েছি তার ২২ পাতার একটি জব্দ তালিকা তৈরি করেছি। সোমবার আদালতে উপস্থাপন করব। যে সম্পদ পাওয়া গেছে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। আদালত পরবর্তীতে যে ধরনের নির্দেশা দেবেন সেভাবে কাজ করব। এ ছাড়া পরবর্তীতে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা হবে এসব বৈধ আয়ের অন্তর্ভুক্ত কিনা।

আরও পড়ুনঃ  সয়াবিন তেলের দাম বাড়ল লিটারে ১৪ টাকা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আমজাদ হোসাইন খান বলেন, আজকে আদলতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রক্রিয়া মেনে লকারে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের জিম্মায় রয়েছে। আদলতের নির্দেশনা মেনে সরকারের কোষাগারে অস্থায়ীভাবে এসব সম্পদ জমা দেওয়া হবে। অথবা আদালত যে নির্দেশনা দেবেন তা পালন করা হবে।

এর আগে রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে এসকে সুরের লকার খুলতে দুদকের সাত সদস্যের একটি টিম আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড সৈয়দা সালেহা নুর।

উল্লেখ্য, এর গত ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এস কে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবানসামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)।

আরও পড়ুনঃ  প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের

এরপর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।-ইত্তেফাক

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *