হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় পুকুর নিয়ে চলছে পুকুর চুরি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চাঁইপাড়া গ্রামের। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ। অবিলম্বে এমন পুকুর চুরি কর্মকান্ড বন্ধের দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন নাগরিক। তারা অবিলম্বে নীরহ মানুষকে হয়রানী ও হেনেস্তার হাত থেকে রক্ষা করার দাবী জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চাঁইপাড়া গ্রামের সরকারী ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত পুকুরটি গত ১৪২৯ সালে তিন বছরের জন্য ভবেশ চন্দ্র নামের এক ভদ্রলোককে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মন্দিরের নামে লীজ দেন। লীজ গ্রহিতা ভবেশ চন্দ্র পরলোক গমন করলে উক্ত পুকুরটি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে শীতল চন্দ্র দেখভাল করেন। শীতল চন্দ্র মন্দিরের পক্ষে পুকুরটি দেখা শুনার জন্য জাকির হোসেন নামের এক মাছচাষীকে দেন। তখন থেকেই জাকির হোসেন পুকুরটি দেখাশোনা শুরু করেন। কিন্তু ওই পুকুরটি একই এলাকার তারেক জিয়া প্রজন্ম দলের ইউনিয়ন সভাপতি আমিনুল ইসলাম পুকুরটি তার বলে দাবী করেন। কিন্তু আমিনুল ইসলাম পুকুরটি কোন দিনই ভোগ দখল করেনি বলে এলাকার লোকজন জানান।
এলাকার লোকজনের অভিযোগ আমিনুল ইসলাম তারেক জিয়া প্রজন্ম দলের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি পুকুরটি দখলের জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এলাকার লোকজন তাকে পুকুরটি অন্যায় ভাবে দখল করতে দেবেনা বলে জানিয়ে দেন। তখন থেকে তিনি এলাকার কিছু সনামধণ্য ব্যক্তিদের জড়িয়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করে আসছে। গত ২৬ জানুয়ারী জাকির হোসেন লোকজন নিয়ে উক্ত পুকুরের মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করেন। মাছ বিক্রিকে কেন্দ্র করে আমিনুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের মাঝে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে এলাকার নামীদামী মানুষের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,আমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে আসছে। তার কথা না শুনলে মামলারও হুমকী প্রদান করে। সরেজমিনে চাঁইপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মন্দির পুকুরের সাথে নিজের পুকুর বলে দাবী করা আমিনুল ইসলমের কোন সম্পৃক্ততা নেই। সেই সাথে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগ করা হয়েছে তারাও কোনদিন ওই পুকুরে মাছচাষ করেননি। এদিকে ওই মন্দির কমিটির সভাপতি শীতল কুমার দাবী করেন আমিনুল ইসলাম আমাকে মিথ্যা স্বাক্ষী বানিয়েছে। মাছ লুটের সাথে চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা জড়িত না। সেই সাথে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারাও না। পুকুর থেকে যারা মাছ মেরেছে তারাই পুকুরে মাছ চাষ করে আসছে। আমাদের মন্দির নামে চেক কাটা হলেও আমিনুল ইসলাম সেটা গোপন করে ফাইদা হাসিলের চেষ্টা করছে। তার মত অনেকেই একই কথা বলেন। আমিনুল ইসলাম নিজেই মন্দিরের পুকুর দখল করতে পায়তারা করছে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন কোন মানুষের ক্ষতি করিনি। বর্তমানে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাখিলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাবো ওই সকল অভিযোগের সঠিক তদন্ত করে যথাযখ ব্যবস্থা নেয়া হোক।