চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : নিজ দপ্তারে বসে প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন নাচোলে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ওয়্যারিং পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে এলে রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে দেলোয়ার হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌ. মো. ছানোয়ার হোসেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সূত্র থেকে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেনের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএমের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে লিখিত আবেদন পাঠান এক ভুক্তভোগী এবং গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে MRtv নামক একটি ফেসবুক পেজে দেলোয়ার হোসেনের ঘুষ নেওয়ার ৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহারাজপুর সাব জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (ওএন্ডএম) শেখর চন্দ্র সাহাকে আহ্বায়ক ও ইনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর আহসান হাবিবকে সদস্য করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ছাড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরেকটি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন—চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভোলাহাট সাব জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (ওএন্ডএম), সদর দপ্তরের অমিত সাহা ও ইনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর সোহাগ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌ. মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমার হোয়াটসঅ্যাপস নম্বরে এক ভুক্তভোগী নাচোলে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ওয়্যারিং পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার লিখিত অভিযোগ পাঠান। পরে আমি তার কাছে বিস্তারিত তথ্য চাই এবং তার সরবরাহকৃত তথ্যের প্রেক্ষিতে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আজকে দেলোয়ার হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আরেকটি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন তার অফিস কক্ষে বসে একজন স্থানীয় বিদ্যুৎ মিস্ত্রী মিজানুর রহমানকে একটি ফাইল দেখিয়ে বলছেন, এই বাণিজ্যিক ফাইলটার কি করলা? উত্তরে মিজানুর রহমান বলছেন, স্যার ১৫শ টাকা নেন। পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন তার কাছ থেকে ১৫শ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে পকেটে ঢুকান। এ সময় মিজানুর রহমান পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেনের উদ্দেশে বলেন, আমরা যা পাই সবাই মিলেমিশে খাই স্যার, তখন উত্তরে পল্লী বিদ্যুতের পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বলেন, অত কথা বলতে হবে না।