স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী শহরের বড়কুঠি পদ্মা গার্ডেন নদীর পাড়ে খাল খনন করে তার ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে সেখানে পারাপারে নেওয়া হয় চাঁদা। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর থেকে বাঁশের সাঁকো পার হতে ১০ টাকা করে চাঁদা নেয় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। ৫ আগস্টে দেশের পটপরিবর্তন হওয়ার পর কিছুদিন বন্ধ ছিল চাঁদা আদায়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও শুরু হয়েছে। এর আগেও এ চাঁদাবাজি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশকরা হয় তবুও তাদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চাঁদা না দেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন স্থানীয় কয়েকজন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন- হাসিম রানা ও মেহেদী হাসান। মেহেদী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছাড়লেও, শরীরে আঘাত নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসিম রানা। এ ঘটনায় রাতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন আহত এক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা পদ্মা নদীর চরে বেড়াতে যান। তারা নগরীর পাঠানপাড়া পদ্মার পাড় লালন শাহ্ মুক্তমঞ্চ হয়ে চরে বেড়াতে যান। ফেরার সময় পদ্মা গার্ডেনসংলগ্ন বড়কুঠি এলাকা হয়ে ফিরছিলেন। সেখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দর্শনার্থীদের যাতায়াতে জনপ্রতি ১০ টাকা নেন একটি মহল। রাবির ওই শিক্ষার্থীদের কাছেও তারা ১০ টাকা করে চান। তবে শিক্ষার্থীরা এদিক দিয়ে পদ্মার চরে যাননি। তাই পাঁচ টাকা করে দিতে চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্থানীয় তরুণেরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে দুজনকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ও হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসিম নামের একজনকে ৩১নং ওয়ার্ডের অর্থোপেডিক্স বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, আহত ছাত্রদের একজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তারা সেটা পুলিশকে জানিয়েছে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, গতকাল রাতে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।