অনলাইন ডেস্ক : জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ করেছেন জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও শহীদ পরিবারের নারী সদস্যরা।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘জুলাইয়ের নারীরা’ ব্যানারে এ সমাবেশ করা হয়। এর আগে দুপুর ২টা থেকে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও শহীদ পরিবারের নারী সদস্যরা শাহবাগে উপস্থিত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবসসুম বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখেছি। কিন্তু জুলাই পরবর্তী সময়ে বার বার আমাকে শুনতে হয়েছে জুলাইয়ের নারীরা কোথায় হারিয়ে গেল। এখনো সমাজে নারীদের ছবি, শরীর নিয়ে বুলিং করা হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ সবচেয়ে কঠিন করেছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ১৬ বছরে যে গুম, খুন, ‘আয়নাঘরের’ রাজনীতি কায়েম করেছিল তাতে বাংলাদেশের মানুষ নারী নেতৃত্বে বিশ্বাস করতে সময় নেবে। শেখ হাসিনার এ পাপের ফল আমাদের সবাইকে ভুগতে হচ্ছে। এজন্য পুনরায় যদি নারীদেরকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হয়, সবার আগে প্রয়োজন শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ৫৩ বছরের একটি লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস আছে। এ সংগ্রামের প্রতিটি পরতে পরতে নারীদের অবদান রয়েছে। জুলাই আন্দোলনেও নারীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। সুতরাং জুলাই পরবর্তী যে রাজনৈতিক দল আসবে, সেখানে আমরা নারীদের নেতৃত্ব স্থানীয় জায়গায় দেখতে চাই। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ’২৪-এর অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সর্বস্তরের সব শ্রেণির মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। আন্দোলনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমরা দেখেছি মায়েরা খাবার রান্না করে খাইয়েছেন, আঁচল দিয়ে আহতদের কপাল বেঁধে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জুলাইয়ে বাংলাদেশে যারা বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের যদি বিচারের আওতায় আনা না যায় তাহলে এ দেশের কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সুতরাং বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
জুলাই আন্দোলনকারী অর্পিতা শ্যামা দাস বলেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই জুলাইয়ের নারীদের পদচারণা শুরু হয়েছে এবং ২০২৪ সালে এসে আমরা সফল হয়েছি। এ আন্দোলনে নারীরা লাঠি হাতে স্বৈরাচারী বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তাদের এ অবদান একটি প্রতীকী ছবি হয়ে উঠেছে যে নারীরা শুধু আন্দোলন করতেই জানে না, নারীরা নেতৃত্বও দিতে পারে।
এ ছাড়া নারী সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) আহ্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারীসহ একাধিক নেতা বক্তব্য দেন।-ঢাকা পোস্ট