অনলাইন ডেস্ক : পুষ্টিবিদেরা পরামর্শ দেন, সারা দিনে যদি পরিমিত ঘি খাওয়া যায়, তা হলে তা শরীরে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জোগান দিতে পারে। আর তার সঙ্গে যদি রসুন মিশিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে তার পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়
গরম ভাতে এক চামচ ঘিয়ের স্বাদই আলাদা। তবে শুধু স্বাদ নয়, ঘিয়ের স্বাস্থ্যগুণও বিপুল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ ঘি, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এখনকার স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন যদিও ঘি, মাখনকে ব্রাত্যের তালিকায় রেখেছেন, তবে পুষ্টিবিদেরা পরামর্শ দেন, সারা দিনে যদি পরিমিত পরিমাণে ঘি খাওয়া যায়, তা হলে তা শরীরে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জোগান দিতে পারে। আর তার সঙ্গে যদি রসুন মিশিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে তার পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়।
ঘিয়ের সঙ্গে রসুন ভাল?
‘জার্নাল অফ ইমিউনোলজি রিসার্চ’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, ঘি এবং রসুন দুই-ই প্রদাহনাশক। ঘিয়ের সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে তা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ঘি-রসুনের উপকারিতা অনেক। তা ছাড়া সর্দি-কাশি, জ্বর বা গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা কমাতেও ঘি-রসুন খাওয়ার নিদান আছে আয়ুর্বেদে।
সারা দিনে যত ক্যালোরি খাওয়ার কথা, তার ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসা উচিত ফ্যাট থেকে। তার মধ্যে ১০ শতাংশের কম যদি স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে আসে, তা হলে ক্ষতি নেই। বরং তা উপকারই করবে। এখন যে হেতু এক চামচ ঘিয়ের মধ্যে থাকা ১৫ গ্রাম ফ্যাটের মধ্যে ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, তাই দিনে দু’চামচ ঘি খাওয়া যেতেই পারে। আর তার সঙ্গে দু’কোয়ার মতো ভাজা রসুন যদি মিশিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে শরীরের পুষ্টি জোগাবে। ঘিয়ে ভাজা রসুন খেলে সাইনাসাইটিসের কষ্ট থেকেও রেহাই মিলবে। আবার ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
হার্ট বা কোলেস্টেরলের সমস্যার জন্য যাঁদের তেল খাওয়া বারণ বা কম খেতে বলা হয়েছে, তাঁরা ঘি-রসুন খেতেই পারেন। আবার ডায়বিটিসের রোগীরাও খেতে পারেন। ওজন কমাতে কঠোর ডায়েট করছেন যাঁরা, তাঁদের জন্যও খুব উপযোগী।
এক কাপ ঘি-এর জন্য ৬ থেকে ৮টি রসুনের কোয়া নিতে হবে। প্রথমে প্যানে ঘি গরম করে নিন। তার পর তাতে রসুনের কোয়াগুলি কুচিয়ে দিয়ে দিন। আঁচ কম রেখে নাড়াচাড়া করতে হবে। সুন্দর গন্ধ বেরোলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ঘি-রসুনের মিশ্রণ কাচের শিশিতে ভরে রেখে দিতে পারেন।
রোজের পাতে গরম ভাতের সঙ্গে অথবা তরকারিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। খিচুড়ি, ডালিয়া বা ওট্স যাঁরা খান, তাঁরা স্বাদ বাড়ানোর জন্য এটি মিশিয়ে নিতে পারেন। আবার রুটিতে মাখিয়েও খাওয়া যাবে ঘি-রসুন। তেল ছাড়া সতে করা সব্জিতে সামান্য ঘি-রসুনের পেস্ট মিশিয়ে দিলে স্বাদও বাড়বে, শরীরের ক্ষতিও হবে না।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। সকলের শরীর সমান নয়। তাই কোনও কিছু খাওয়ার আগে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াই উচিত।