অনলাইন ডেস্ক : দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন রেখা গুপ্তা। শালিমার বাগ আসন থেকে প্রথমবারের মতো বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপির নির্বাচিত বিধায়কেরা দলীয় বৈঠকে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেন।
৫০ বছর বয়সী রেখা গুপ্তা আম আদমি পার্টির অতিশির স্থলাভিষিক্ত হবেন। এর মধ্য দিয়ে দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ১০ বছরের শাসনের অবসান ঘটবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি বিজেপি। বিজেপির পোস্টে বলা হয়েছে, ‘বিধানসভার দলনেতা নির্বাচিত হওয়ায় রেখা গুপ্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। আমরা আশাবাদী, আপনার নেতৃত্বে রাজ্য আরও উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।’
বিজেপির বিধায়কেরা এখন রাজধানী দিল্লির গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনার বাসভবনের (রাজভবন) দিকে যাচ্ছেন, যেখানে রেখা গুপ্তা তাঁর কাছে সরকার গঠনের দাবি পেশ করবেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, তাঁর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠিত হবে। বিজেপিকে সমর্থন দেওয়া সব সম্প্রদায়—জাট, বণিয়া, পাঞ্জাবি, পূর্বাঞ্চলী, ব্রাহ্মণ ও দলিত এই মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাবে।
রাজভবনে যাওয়ার আগে রেখা গুপ্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি বিজেপিকে ধন্যবাদ জানাই এবং আপনাদের সবার আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞ… আমি দিল্লিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এদিকে দিল্লিতে প্রায় ২৬ বছর পর ক্ষমতায় ফিরল বিজেপি। তাই আগামীকাল রামলীলা ময়দানে বিশাল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করছে বিজেপি।
এর আগে ১৯৯৮ সালে দিল্লিতে বিজেপির একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ, তিনি মাত্র ৫২ দিন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত টানা তিন মেয়াদে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর আম আদমি পার্টির অতিশি তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘দিল্লি বিজেপি বিধানসভার দলনেতা নির্বাচিত হওয়ায় রেখা গুপ্তাকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমি নিশ্চিত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য অনুযায়ী দিল্লিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে আপনি কাজ করবেন।’
রাজনীতিতে রেখা গুপ্তার উত্থান অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ থেকে। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি দিল্লি বিজেপি মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক, বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ২০০৭ সালে উত্তর পিতমপুরা থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি দক্ষিণ দিল্লি পৌর সংস্থার মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২৬ বছর পরে ফের দিল্লির ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। দিল্লির ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপি জয়ী হয়েছে ৪৮টি আসনে। অন্যদিকে টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর হেরে গিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)। তারা পেয়েছে মাত্র ২২টি আসন। কেজরিওয়াল নিজের (নয়াদিল্লি) কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থী প্রবেশ বর্মার কাছে হেরে গিয়েছেন। সুষমা, শীলা দীক্ষিত, অতিশয় মার্লেনার পরে দিল্লি পেল চতুর্থ মহিলা মুখ্যমন্ত্রী।