অনলাইন ডেস্ক : আপনি কখন খাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন, কতটাই বা খাচ্ছেন, এমনকি যা যা খাচ্ছেন তা আপনার শরীরের জন্য ঠিক কি না, তার সবটাই ধরা পড়বে ডিএনএ পরীক্ষায়। অবাক লাগলেও সত্যি।
খাওয়াদাওয়া নিয়ে মিথ্যা বলার দিন শেষ। বাইরে পিৎজ়া-বার্গার খেয়ে এসে বাড়িতে ডালিয়ার খিচুড়ি খেতে খেতে যতই বলুন, আপনি ডায়েট করছেন, তাতে আর লাভ হবে না কিছু। কারণ আপনি কখন খাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন, কতটাই বা খাচ্ছেন এমনকি যা যা খাচ্ছেন তা আপনার শরীরের জন্য ঠিক কি না, তার সবটাই ধরা পড়বে ডিএনএ পরীক্ষায়। অবাক লাগলেও সত্যি। কার শরীর কতটুকু খাবার হজম করতে পারবে, কে কতটা খেলে ওজন ধরে রাখতে পারবেন, তা বোঝার জন্য এক নতুন এক পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন আমেরিকার ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেম বায়োলজি (আইএসবি)-র বিজ্ঞানীরা।
বিএমআই নয়, এ বার ডিএনএ পরীক্ষা করেই ডায়েট ঠিক করে দেওয়া যাবে। আর সেটাও হবে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে, আন্দাজ বা অনুমানের দ্বারা নয়। ধরুন, কারও ওজন অনেকটাই বেশি। চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ বলেই দিলেন, ফ্যাট একেবারেই খাওয়া যাবে না, বরং প্রোটিন খেতে হবে। কিন্তু হয়তো সেই ব্যক্তির শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে। সঠিক খাবার না খাওয়ার কারণেই তাঁর শরীরে মেদ জমছে। ঠিক এই সমস্যার জায়গাটাই ধরা যাবে। আবার ধরুন, কেউ ডায়েট করেও রোগা হতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষাটি করলে বোঝা যাবে, তিনি ভুল পদ্ধতিতে ডায়েট করছেন কি না।
রক্তের ডিএনএ নয়, এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা করা হবে মলের ডিএনএ। তার থেকেই বোঝা যাবে সেই ব্যক্তির পাকস্থলীর অবস্থা কেমন, হজম ক্ষমতা কতটুকু, ঠিক কোন খাবার তাঁর খাওয়া উচিত। এই পরীক্ষাপদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেটাজিনোমিক এস্টিমেশন অফ ডায়েটরি ইনটেক’ (এমইডিআই)। ‘নেচার মেটাবলিজ়ম’ জার্নালে এই বিষয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক ক্রিশ্চিয়ান ডিয়েনার জানিয়েছেন, পুষ্টিজনিত নানা বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এই পদ্ধতিটি আবিষ্কৃত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল পুষ্টি ও বিপাকজনিত নানা রোগের চিকিৎসা সঠিক ভাবে করা এবং অবশ্যই স্থূলতার সমস্যা নির্মূল করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসেব বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর ২৮ লক্ষেরও বেশি মানুষের স্থূলতা বা শরীরে অতিরিক্ত ওজন হওয়ার কারণে মৃত্যু হয়। ৩ কোটি ৫৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ স্থূলতাজনিত রোগে ভুগছেন। শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে থাকলে দুরারোগ্য এবং জটিল এমন অনেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিই বাড়ে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার জেরে শরীরে বাড়তে থাকে মেদের পরিমাণ। যা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অকালেই হাতছানি দিতে পারে বহু রোগ।
এমইডিআই পরীক্ষা পদ্ধতিটি এখনও গবেষণার স্তরেই আছে। অনেকের উপর পরীক্ষা করে তবেই সেটির প্রয়োগ শুরু হবে।-আনন্দ বাজার