অনলাইন ডেস্ক : কয়েক বছর ধরে নাগালের বাইরে থাকার পর অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ভারতের রাজধানী দিল্লির ‘লেডি ডন’ জোয়া খান। তাকে ২৭০ গ্রাম হেরোইন-সহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি রুপি। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গ্যাংস্টার হাশিম বাবার তৃতীয় স্ত্রী জোয়া খান। দিল্লির পুলিশের নজরে অনেক দিন ধরেই ছিলেন তিনি। গ্যাংস্টারের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের শক্ত কোনও প্রমাণ পাচ্ছিল না পুলিশ। ফলে পুলিশের নজরদারিতে থাকলেও গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না।
তবে হাশিম জেলে যাওয়ার পর থেকেই তার মাদক-সাম্রাজ্যের দায়িত্ব নেন জোয়া। কিন্তু তিনি এমন কৌশলে এই মাদক ব্যবসা সামলাতেন যে, তার বিরুদ্ধে অবৈধ কাজের কোনও প্রমাণই জোগাড় করতে পারছিল না পুলিশ।
হাশিমের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি এবং চোরাচালানসহ ১২টিরও বেশি মামলা রয়েছে। বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছেন তিনি। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে পুরো গ্যাং সামলান ‘লেডি ডন’। স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ২০১৭ সালে হাশিমকে বিয়ে করেছিলেন জোয়া। দু’জনেই উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দা এবং ঘটনাচক্রে একে অপরের প্রতিবেশী। সেই সূত্র ধরেই আলাপ, প্রেম এবং তারপর বিয়ে। মূলত জোয়াকে এই মাদক কারবারে নামানোর নেপথ্যে ছিলেন দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পার্কার।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাদক-সাম্রাজ্য চালালেও জোয়া নিজের একটা ভাবমূর্তি বজায় রেখে চলেন। বিত্তবান ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠাবসা, পার্টিতে যাওয়া, বিলাসবহুল পোশাক, গয়নায় নিজেকে সাজিয়ে রাখেন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও বেশ সক্রিয় তিনি। তার বহু অনুসারীও রয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, কয়েক বছর ধরেই জোয়াকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছিল দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। কিন্তু কিছুতেই তাকে নাগালে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকেই মাদক-সহ গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
অবশ্য জোয়ার পরিবারের সদস্যরাও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। যৌনচক্র চালানোর অভিযোগে ২০২৪ সালে তার মা গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। জোয়ার বাবাও মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে যে কয়েকটি গ্যাং সক্রিয় তার মধ্যে হাশিম বাবা গ্যাং অন্যতম।