বাসে ডাকাতি ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ না নেওয়ায় বড়াইগ্রামের ওসি প্রত্যাহার

বাসে ডাকাতি ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ না নেওয়ায় বড়াইগ্রামের ওসি প্রত্যাহার

নাটোর প্রতিনিধি : যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ না নেওয়া এবং ঘটনা চেপে রাখার প্রবণতা দেখানোর কারণে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বিকেলে তিনি বড়াইগ্রাম থানা পরিদর্শনে যান। তখন তিনি ওসি সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। পরে তাঁকে প্রত্যাহার করে নাটোর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় যান। কিন্তু ওসি অভিযোগ নেননি, আবার বিষয়টি আমাদেরকেও জানাননি। এ ঘটনায় তিনি যথেষ্ট দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারেননি। এ জন্য তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ  বড়াইগ্রামের শিশু জুঁই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ

ডিআইজি বলেন, কেন তিনি অভিযোগ নেননি; কিংবা আমাদের জানাননি—এ জন্য তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে। এ জন্য তাঁর কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে এবং প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, এমন প্রশ্নে ডিআইজি বলেন, ‘আমরা ৭-৮ জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আজও দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুনেছেন। কিন্তু ধর্ষণ কি না, তা নিশ্চিত করে তাঁরা বলতে পারেননি। তবে শ্লীলতাহানি হয়েছে, এটা বলা যায়। তারপরও আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে চারজন মহিলা যাত্রীর মোবাইল নম্বর পেয়েছি। তাঁদের কাছে মহিলা পুলিশ পাঠাব। তাঁরা পুরুষের কাছে হয়তো সব বলতে চাইবেন না। তাই মহিলা পুলিশই পাঠাব। তাঁদের কাছ থেকে ঘটনা শুনব। তারপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

আরও পড়ুনঃ  চলন্ত বাসে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, চালক-হেলপার গ্রেপ্তার

ডিআইজি বলেন, ‘টাঙ্গাইল এবং নাটোর পুলিশ যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করছে। আমরা ঘটনার ভেতর ঢুকেছি। আশা করছি দ্রুতই সবকিছু আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে এবং যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব।’

এর আগে গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলসের’ একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চলন্ত বাসে ৩ ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে একই জায়গায় বাসটি ঘুরিয়ে নিয়ে গিয়ে ভোর ৪টার দিকে ডাকাতেরা নেমে যায়। এ সময় যাত্রীদের সবকিছুই লুট করা হয়। ডাকাতি ছাড়াও নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুনঃ  লুডু খেলাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২০

ডাকাতির ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হলে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। ঘটনার তিন দিন পর গতকাল এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় বাসের এক যাত্রী একটি মামলা করেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *