শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়ি আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। এটি পরিকল্পিত নাশকতা বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ঘাসুড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভস্মীভূত বাড়ির মালিক আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।
আগুনে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ওসমান গণি বলেন, ‘বাড়িটি টিনের তৈরি। রাত ১টার দিকে জানালা দিয়ে আগুন দেখতে পাই। তখন বাড়িটির দক্ষিণ-পূর্ব কোণের একটি ঘরে আগুন লেগেছিল। আমি চিৎকার করে বেরিয়ে এসে প্রতিবেশীদের ডাকতে থাকি। কিন্তু নিমেষেই গোটা বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এত দ্রুত ছড়িয়েছে, আমরা নেভানোর চেষ্টা পর্যন্ত করতে পারিনি।’
ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না বলে জানিয়েছেন আবু বক্করের ছেলে কাওসার হাবিব। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ হওয়ায় কয়েক দিন আগে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বগুড়ায় নেওয়া হয়। মাসহ সবাই বগুড়াতে আছি। রাতে প্রতিবেশীদের ফোনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে আসি। ততক্ষণে সব শেষ হয়ে যায়। আমাদের ছয়টি ঘর, আসবাব, আমার সব মূল সনদপত্র, সোনার গয়না—সব পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
এ ঘটনাকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে দাবি করেছেন কাওসার। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। ৫ আগস্টের পর থেকে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে আগুন লাগানো হয়েছে। তা ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী বাবার শোয়ার ঘরে প্রথমে আগুন দেখা গেছে। কোনো বিস্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার না করলে আগুন এত দ্রুত ছড়ানোর কথা নয়।’
শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৯৯৯-এ কল পেয়ে দুটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বাড়িটির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাতের সঠিক কারণ নির্ণয় করার জন্য তদন্ত চলছে।’
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’