রাবি প্রতিনিধি : অন্য বিভাগ থেকে সভাপতি নিয়োগের আদেশ প্রত্যাহার ও নিজ বিভাগ থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। বেলা সোয়া ২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ভবনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অপ্রীতিকর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহিদ হোসেনকে স্বপদে-স্ববেতনে ও প্রেষণে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে বদলি করা হয়। যোগদানের তারিখ থেকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী আগামী তিন বছরের জন্য ওই বিভাগের সভাপতি নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সরদারকে বিভাগের সভাপতির রুটিন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আদেশে। আজকের কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা ওই আদেশ প্রত্যাহার করে নিজ বিভাগ থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে সভাপতি নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। কর্মসূচিতে বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইফ রহমান বলেন, ‘আমাদের বিভাগে যোগ্য শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন রাতের আঁধারে ফাইন্যান্স বিভাগের একজন শিক্ষককে বদলি করে সভাপতি নিয়োগ দিয়েছে। এতে রীতিমতো আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের যোগ্যতার দিকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আমাদের বিভাগে যখন যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন, তাহলে কেন বাইরের বিভাগ থেকে সভাপতি নেব। আমাদের বিভাগের আগের সভাপতি, তিনিও অন্য বিভাগের ছিলেন। আমাদের কিছু না জানিয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে বিদেশে চলে গেছেন। আমরা আর অন্য বিভাগ থেকে সভাপতি চাই না।’ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘অন্য বিভাগের শিক্ষককে আমরা সভাপতি হিসেবে চাই না। যাঁরা আমাদের বিভাগকে ধারণ করেন, তাঁদের একজনকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সভাপতি হিসেবে চাই। আমরা দেখেছি, বর্তমান উপাচার্য কীভাবে নিজের ইচ্ছামতো স্নাতক পাস ছাড়া একজনকে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের বিভাগের সভাপতি কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে নোংরা রাজনীতি রয়েছে, যার শিকার আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা।’ দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নিজ বিভাগে যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন। তাহলে কেন অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতি নিয়োগ দেওয়া হলো? আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ওই বিভাগ থেকে নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীর। বেলা সোয়া ১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নামাজের জন্য ভবন থেকে বের হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এ ঘটনায় দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সব কাজ বন্ধ থাকবে।’ এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি।