অনলাইন ডেস্ক : ইউরোপজুড়ে বেশ কয়েকটি দেশে কনস্যুলেট বন্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, জার্মানির লাইপজিগ—হামবুর্গ—ডুসেলডর্ফ, ফ্রান্সের বোর্দো—স্ট্রাসবুর্গ, ইতালির ফ্লোরেন্সসহ বেশ কয়েকটি ছোট শহরে কনস্যুলেট বন্ধ করা হতে পারে। তবে, এ ইস্যুতে এখনো নিশ্চিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এ তালিকায় আরও কিছু শহর যোগ হতে পারে বা কিছু শহর বাদও পড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এ ঘোষণা এমন এক সময়ে এল যখন ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা চলছে। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপের হুমকিসহ নানা ইস্যুতে দীর্ঘ দিনের এই মিত্রদের মধ্যে ক্রমেই দূরত্ব স্পষ্ট হচ্ছে। এরই মধ্যে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে ইউরোপ।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, বিশ্বব্যাপী কর্মীবাহিনী কমানোর পরিকল্পনা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়াশিংটনেও পররাষ্ট্র দপ্তরের বেশ কয়েকটি ব্যুরো একীভূত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ তালিকায় থাকতে পারে মানবাধিকার, শরণার্থী, বৈশ্বিক অপরাধ বিচার, নারী বিষয়ক এবং মানব পাচার রোধে কাজ করে এমন সব ব্যুরো।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক পরিষেবা পুনর্গঠনে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেন, তিনি চান তাঁর আমলাতন্ত্র যেন রিপাবলিকানদের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার সঙ্গে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ হয়। ফেব্রুয়ারিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, ফেডারেল কর্মীবাহিনীর পেছনে খরচ কমানোর অংশ হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের ১০ শতাংশ ছাঁটাই করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
সমালোচকেরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক উপস্থিতি কমানো এবং ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিপক্ষরা সেই শূন্যস্থান পূরণ করে ফেলতে পারে। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য—তারা সঠিক পথেই এগোচ্ছে।