স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনকারিদের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে ছাড়াতে তদবির করতে গিয়ে থানার মধ্যে বিএনপি নেতাদের দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও আসামী নিজেও কৃষকদলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটুকে লাথি মারে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভিতরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার এজাহারভুক্ত ৬৫ নং আসামি আবুল কালাম। তিনি এক সময় পবা উপজেলার পারিলাতে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত হয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেন। আবুল কালাম রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং রাজশাহী ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি ছিলেন।
কৃষকদলের আলামিন সরকার টিটু অভিযোগ করে বলেন, আবুল কালাম গতবছরের ৫ আগষ্ট মামলার আসামী। আওয়ামী সরকারের দোসর জানার পরেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতা থানা থেকে আসামি ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে আসে। এটি দুঃখজনক।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রতিবাদ করার কারণে থানার ভিতরে ওসিসহ সকলের সামনে আমাকে আবুল কালাম লাথি মারে এবং শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমানসহ রাজশাহী নগরীর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের কিছু নামধারী নেতাকর্মীরা আমাদের লাঞ্ছিত করে।
মহানগরের শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, আবুল কালাম আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় দেখা করতে গিয়েছিলাম। আওয়ামী শাসনামলে আবুল কালামকে ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি থেকে বের করে দেয়া হয়। ২০২৪ সালে মেয়র লিটন দ্বারা মামলার শিকার হন।
তিনি আরও বলেন, আবুল কালাম একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। ব্যবসায়িক স্বার্থে মেয়র লিটনসহ বিভন্ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সমন্বয় করে চলতে হতো। জিল্লুর অভিযোগ করেন, মূলত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সমিতি দখল করতেই আবুল কালামকে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আসামী আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করার পর নগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তাঁরা একে অপরের সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু করে।
বোয়লিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, বিএনপির বেশ কিছু নেতা আবুল কালামের সাথে দেখা করতে এসেছিল। তবে কেউ আসামীকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করেনি। এজহার নামীয় আসামী হওয়ায় আবুল কালামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় থানার মধ্যে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কিছু অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।