হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : রাজশাহীর সর্ববৃহৎ উপজেলা বাগমারা। এখানে প্রায় চার লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ১৬ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বাগমারা উপজেলা। কৃষি প্রধান উপজেলা বাগমারা হলেও শিক্ষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ অবকাঠামগত উন্নয়ন সহ বিভিন্ন দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে বাগমারা উপজেলা।
বৃহত্তর বাগমারাকে প্রশাসনিক ভাবে সকল দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। এক বছরে বাগমারার সার্বিক অনেক উন্নয়নেই ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এটা যেন মানবিকতার প্রতীক।
প্রশাসনিক দিকে নজর রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে পাচ্ছেন উপজেলার এই নির্বাহী কর্মকর্তাকে। বাগমারায় যোগদানের পর থেকেই অনেক চড়াই উৎরায় পেরিয়ে রেখেছেন সাফল্যের স্বাক্ষর। ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ বাগমারায় যোগদান করেন মাহবুবুল ইসলাম। বাগমারায় এক বছরে ঘটে গেছে অনেক অঘটন। অনেক ঘটনারই স্বাক্ষী হয়েছেন তিনি।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্যে দিয়ে দায়িত্বে ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম।
৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে শুরু হয় নতুন করে পথচলা। উপজেলার পাশাপাশি আইন সালিশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ৫ আগস্ট এর পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। সেই হিসেবে তাহেরপুর পৌরসভায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
গত ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে তাহেরপুর পৌরসভায় চালু করেন ব্যাংকিং পদ্ধতিতে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের ব্যবস্থা। এর ফলে হয়রানি মুক্ত সেবা পাচ্ছে পৌরবাসী। কর আদায় বেড়েছে চার গুণ। সে সাথে তাহেরপুর পৌরসভার নাগরিক অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সৌর বিদ্যুৎ চালিত ১২০ টি বাতি।
পাশাপাশি বাগমারার কৃষি জমি রক্ষায় নিয়েছেন ব্যতিক্রমি উদ্যোগ। অবাধে কোথাও যেন পুকুর খনন না হয় সেটা শক্ত হাতে দমন করে চলেছেন। বাগমারার যেখানেই অনিয়ম সেখানে ছুটে গেছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এক বছর পূর্তিতে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, একটি উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন নিশ্চিত হয় যখন তার দুর্নীতি কম থাকে। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকেই ঘুষ দুর্নীতিমুক্ত সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। এর ফলে অনেকটাই কমে গেছে তদবির বাণিজ্য। সেই সাথে বাজারের যানজট নিরসনে নিয়েছেন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। যানজট হয় এমন স্থানে আনসার সদস্য দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছেন। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করে চলেছেন নিয়মিত। ফলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি অনেকটাই কমে এসেছে।
উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কারণে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছি।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক অহিদুল ইসলাম বলেন, দল মত নির্বিশেষে এখন সবাই সেবা পাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ নজরদারির ফলে বেড়েছে শিক্ষার মান।
ভবানীগঞ্জ আদর্শ টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ জিয়াউল আলম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম একজন শিক্ষা বান্ধব কর্মকর্তা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সমস্যায় তাঁর কাছে গেলে দ্রুত সেটা সমাধান করেন। বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দায়িত্ব পালন করায় কারিগরি ক্ষেত্রে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমার উপর যে দায়িত্ব সেটা আমি যথাযথ পালনের চেষ্টা করেছি মাত্র। মানুষ যেন সরকারি সেবা নিতে এসে হয়রানের শিকার না হয় এদিকে আমি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে থাকি। সরকারি সেবা পাওয়া প্রতি মানুষের নাগরিক অধিকার। পাশাপাশি মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে সপ্তাহে একদিন গণশুনানি করে থাকি। চেষ্টা করেছি দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের স্বার্থ সুরক্ষায় দায়িত্ব পালন করার। মূলত বাগমারার মানুষের সহযোগিতাই আমি আমার এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছি।