ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, হাসিনা পালিয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র পাইনি, ভোটাধিকার পাইনি।
তিনি বলেন, বন্ধুগণ একটা কথা বলতে চাই, যে ১৭ বছর আপনারা সংগ্রাম করছেন একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনারা-আমরা কি এখনো সেই সুষ্ঠু নির্বাচন পেয়েছি?
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দা মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি মাঠে শামা ওবায়েদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা অনেক অত্যাচার করেছে। শেখ হাসিনা আমার বাবাকে, একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে, আপাদমস্তক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এক ব্যক্তিকে জেলহত্যার মতো একটি জঘন্য মামলা দিয়েছিল। জেলহত্যা মামলায় আমার বাবা দিনের পর দিন জেল খেটেছে। উনি জেলে থেকে ধানের শীষে নির্বাচন করে পাস করে বের হয়েছেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর আমার বাবার চরমভাবে একটা হার্ট অ্যাটাক হয়। কিন্তু এতগুলো বছর শেখ হাসিনা তাকে একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জেল খাটালো। যার কারণে আমার বাবা আরও অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবার মতো দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকেও একটি মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছেন। তারেক রহমানকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের বাইরে রেখেছেন। উনি (শেখ হাসিনা) বিএনপির কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়েছেন, জেল খাটিয়েছেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচন হয়েছে। যেখানে আমরা ভোটকেন্দ্রে কুকুর-বিড়াল বসে থাকতে দেখেছি। ২০১৮ সালে হয়েছে নিশিরাতের নির্বাচন। এই নগরকান্দা এবং সালথায় আগের দিন ভোট কাটা হয়েছে আপনারা সাক্ষী। এই ৭ জানুয়ারির (২০২৪) নির্বাচন আমি-ডামির নির্বাচন। আওয়ামী-আওয়ামী দাঁড়াইছে। সেই নির্বাচনেও কেউ ভোট দিতে যায়নি। আমাদের যুবক ভাই-বোনেরা এই বাংলাদেশের মাটিতে একটি সুষ্ঠু ভোট দিতে পারেনি।
প্রয়াত বাবার স্মৃতি রোমন্থন করে শামা ওবায়েদ বলেন, ১৮ বছর হলো বাবা চলে গেছে। এই ১৮ বছর ধরে নগরকান্দা এবং সালথায় আমার বাবা ও বিএনপির আদর্শকে ধারণ করে যারা জিয়াউর রহমানের পথে পথ চলেছেন, তারেক রহমানকে নেতা মেনে দিনের পর দিন আন্দোলন করেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দিনের পর দিন বছরের পর বছর যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন, যারা দল ছেড়ে যাননি তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, সালাম করছি। বিশেষভাবে তাদের অবদানকে স্মরণ করছি।
তিনি আরও বলেন, আজ আমার বাবা নেই। উনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সংগ্রাম করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে নগরকান্দা-সালথার মানুষের জন্য উনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। আমি এর সাক্ষী, আপনারা সকলে সাক্ষী। উনি দল-মত-ধর্ম-গোত্র দেখেননি। আমি উনার মেয়ে হিসেবে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা দোয়া করবেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেন আমি আপনাদের পাশে থাকতে পারি, সেবা করতে পারি।
সভায় উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান তালুকদারের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুরফিকার হোসেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।