জলবায়ু ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সুরক্ষার দাবিতে সমাবেশ

জলবায়ু ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সুরক্ষার দাবিতে সমাবেশ

অনলাইন ডেস্ক : জলবায়ু সুরক্ষা ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ, নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণ ও টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবিতে সমাবেশ করেছেন কয়েক হাজার তরুণ তরুণী।

আজ (শুক্রবার) রাজধানীর জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউ সড়কে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যুব প্ল্যাটফর্ম অ্যাক্টিভিস্টা বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত সমাবেশ থেকে বিশ্বনেতাদের কাছে এ আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ শেষে খামারবাড়ি থেকে র‍্যালি শুরু করে আড়ংয়ের মোড় ঘুরে জাতীয় সংসদের সামনে দিয়ে আবার খামারবাড়ির সামনে এসে শেষ হয়।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা স্লোগান, প্ল্যাকার্ড, চিত্রকর্ম, গান, নাটক এবং পোস্টার প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানান। এসময় এখনই জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে এই মর্মে ‘ডোন্ট সেল আওয়ার ফিউচার’, ‘ফিক্স দ্য ফাইন্যান্স’, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করো, ক্ষতিকারক কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ বন্ধ করো’, ‘ক্লাইমেট জাস্টিস নাউ’ এবং ‘জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ করুন’সহ ইত্যাদি লেখা ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন সমাবেশে যোগ দেওয়া জলবায়ু আন্দোলনকারীরা।

আরও পড়ুনঃ  রমনা বটমূলে গানে গানে বর্ষবরণ, গাজায় নিহতদের স্মরণ

এছাড়াও আন্দোলনকারীদের ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ক্লাইমেট জাস্টিস’, ‘ব্যাংক তুমি ভালো হয়ে যাও, জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে দাও’, ‘জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ, ডেকে আনছে আমাদের দুর্যোগ’, ‘বেঁচে থাকার অধিকার, চাই জলবায়ু সুবিচার’, ‘নিড সলিউশন, নট পলিউশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশ থেকে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর ও ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করতে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনে চলমান অমানবিক যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়।

সমাবেশে জলবায়ু যোদ্ধারা বলেন, উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে। তারা নব্য ঔপনিবেশিক শোষণ, যুদ্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এই পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। পুঁজিবাদী মানসিকতা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে মানুষের চেয়ে মুনাফাই মুখ্য। এটি পৃথিবীতে বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে ধ্বংস করছে। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে দক্ষিণের দেশগুলোর তরুণ, কৃষক, নারী এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলোতে। এটি অনুন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে তাদের পরিবেশগত ঋণ বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে। এই অবস্থায় জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে টেকসই প্রকল্প এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আহ্বান এসেছে গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে।

আরও পড়ুনঃ  পাকিস্তানের কাছে স্বাধীনতার আগের পাওনা ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার চাইল বাংলাদেশ

জলবায়ু সংকট নিরসন, এই বিষয়ে ন্যায়বিচার দাবি ও জনগণকে সচেতন করতে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও অ্যাক্টিভিস্টা বাংলাদেশসহ ১৮ জেলার ৩৩টি যুব সংগঠনের ৩ হাজারের অধিক জলবায়ু কর্মী এই স্ট্রাইকে অংশ নেন। একইসময় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট, কুষ্টিয়া, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, পটুয়াখালী, টেকনাফ, বান্দরবান, বরগুনা ও নারায়ণগঞ্জসহ লোকাল রাইটস প্রোগ্রাম (এলআরপি) এবং বেশ কিছু লোকাল ইয়ুথ হাবের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরাও গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুনঃ  এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয় : ফারুকী

তরুণ জলবায়ু কর্মীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ইয়াং পিপল টিম লিডার মো. নাজমুল আহসান বলেন, এবার তরুণরা জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারকদের জবাবদিহি করতে সোচ্চার হয়েছে। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ তাদের দাবির সঙ্গে দৃঢ় সংহতি প্রকাশ করে এবং জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষিবান্ধব পরিবেশের জন্য টেকসই বিনিয়োগের দাবিতে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে।

বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলোর প্রতি জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করতে এবং সবুজ রূপান্তরকে উৎসাহিত করার জন্য প্রযুক্তি ও সম্পদ বিনিময়ের আহ্বান জানান তিনি।

এসময় ফিলিস্তিনে চলমান অমানবিক যুদ্ধ বন্ধে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। যুদ্ধে অসংখ্য শিশু, নারী ও বৃদ্ধের মৃত্যুতে গভীর সহানুভূতি ও শোক প্রকাশ করা হয়।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *