অনলাইন ডেস্ক : জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এছাড়া হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। এমন অবস্থায় নিজেদের পানির ন্যায্য হিস্যা রক্ষার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া পানির ন্যায্য হিস্যা রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশটি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সিন্ধু পানিচুক্তির অধীনে পাকিস্তানের প্রাপ্য পানি সুরক্ষায় দেশটি প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বলে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন।
ভারতের একতরফাভাবে এই চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের পর ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইসহাক ডার। তিনি বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং এটি দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত সম্পর্কের নীতিমালা ও স্বাক্ষরিত চুক্তির সরাসরি পরিপন্থি।
তিনি আরও বলেন, সিন্ধু পানিচুক্তি শুধু ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয় নয়, এটি গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করা দরকার।
ইসহাক দার ভারতকে “পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের” প্রচেষ্টার জন্য নিন্দা জানান এবং বলেন, সিন্ধু নদী ব্যবস্থা পাকিস্তানের ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনধারণের অন্যতম প্রধান উৎস। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও দেশের পানির অধিকার সুরক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।
এই বৈঠকে আইন ও বিচারমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কারিগরি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে ভারতের ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের’ ছদ্মাবরণে যদি কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে পাকিস্তান উপযুক্ত জবাব দেবে।
তিনি আরও জানান, ভারত অনেক দিন ধরেই সিন্ধু পানিচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এই চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করা সম্ভব নয়, কারণ বিশ্বব্যাংক এর গ্যারান্টার হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
খাজা আসিফ বলেন, এই ইস্যুটি জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) পরবর্তী বৈঠকে প্রাধান্য পাবে।