স্টাফ রিপোর্টার : পবিত্র আশুরা আজ। কারবালার শোকাবহ এবং হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল দিনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পবিত্র আশুরা পালিত হবে।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেইন (রা.) ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।
মর্মস্পর্শী এ ঘটনা স্মরণ করে প্রতি-হিজরি সনের ১০ মহররম বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় শোকাবহ দিনটি পালন করে থাকে। আশুরা উপলক্ষে শনিবার সরকারি ছুটি থাকবে।
কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়। পবিত্র আশুরা মানেই শোকের-মাতম। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে তাদের শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এ বছরও পবিত্র আশুরার আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে।
আশুরা উপলক্ষে শনিবার (২৯ জুলাই) রাজশাহী নগরীতে তাজিয়া মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, তাজিয়া মিছিলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এছাড়াও দিবসটিতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দিনটিতে সকালে রাজশাহী মহানগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, দরগাপাড়া ও শিরোইল কলোনী এলাকা থেকে বিভিন্ন সাজে তাজিয়া মিছিল বের করবে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন।
এর মধ্যে দরবারে মা খাতুনে জান্নাত (র.) তরিকায়ে নকশাবন্দীর আশুরা উদযাপন কমিটি নগরীর শিরোইল কলোনী থেকে তাজিয়া মিছিল বের করে। বাংলাদেশ আহলে বাইত ফাউন্ডেশন নগরীতে শোক মিছিল, পথসভা ও ইসলামিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
এছাড়া বাদ মাগরিব রাজশাহী জেলা এবং মহানগরের বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। অপরদিকে, রাতে এশার নামাজ আদায়ের পর শাহমখদুম দরগা শরীফসহ বিভিন্ন মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ, জিকির-আজগার এবং বিভিন্ন নফল ইবাদত বন্দেগীর মধ্যদিয়ে রাত্রী যাপন করবেন।
এদিকে আশুরাতে কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন-১৯৯২ এর ২৬ (ঢ), ২৬ (ট)(ই), ২৯(১)(ক) ও ২৯(১)(খ) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে মহানগর এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফুটানোসহ অন্যান্য ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার, হিংসাত্মকভাবে আঘাত করার উদ্দেশ্যে অস্ত্রশস্ত্র, তলোয়ার, বর্শা, বন্দুক, ছোরা বা লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অন্য কোনো ক্ষতিকর দ্রব্যাদি বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাছাড়া গণউপদ্রব সৃষ্টি করতে পারে এমন অতি উচ্চ শব্দ জনিত মাইক ও স্পিকার ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।