স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঁচ বছর আগেই করা হয়েছে স্তন পরীক্ষার ব্যবস্থা। সুলভে ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ শনাক্তে রোগীর কাছে হয়ে ওঠে ভরসার স্থল। দিনে দিনে বাড়তে থাকে সেবাপ্রার্থী। কয়েক বছর ভালোই চলছিল। সম্প্রতি সেটি হতাশ করেছে রোগীদের।
মাসখানেক ধরে তাদের ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কারণ, প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকায় কেনা যন্ত্রটি পড়ে আছে অলস। চলতি মাসের শুরু থেকেই মেমোগ্রাফি মেশিনটি বন্ধ থাকায় সেবাগ্রহীতার পকেট থেকে খসছে বাড়তি পাঁচ-ছয় হাজার টাকা। তবে কী কারণে সেটি কাজে আসছে না, তা কেউ জানে না।
হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় মেমোগ্রাফি মেশিন কেনা হয়। সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো (সিএমএসডি) তা সরবরাহ করে। ২০২১ সাল পর্যন্ত মেশিনটির ওয়ারেন্টি ছিল। গত ৫ জুলাই মেশিনটির ওয়ার্ক স্টেশনের পিসি নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধারণা কর্মরতদের। এ কারণে পিসি চালু হচ্ছে না, প্রিন্ট করা যাচ্ছে না পরীক্ষার রিপোর্ট। বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে সেবা। এতে রোগীদের কয়েক গুণ টাকা খরচ করে বাইরে থেকে পরীক্ষাটি করতে হচ্ছে।
রামেক হাসপাতালের মেমোগ্রাফি মেশিনের টেকনোলজিস্ট হেলেন আখতার বলেন, যন্ত্রটি ভালো আছে। চালু হচ্ছে। পরীক্ষাও করা যাচ্ছে। তবে রিপোর্ট বের হচ্ছে না। রিপোর্ট না পেলে রোগীরা চিকিৎসককে দেখাবে কী? এ কারণে রোগীদের সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বাইরে একটি স্তন মেমোগ্রাফি করতেই তিন হাজার টাকার ওপরে লাগে। দুটির জন্য পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকার ওপরে। অনেকে লোক বুঝে ফি নির্ধারণ করেন। তবে হাসপাতালের মেশিনে একটির জন্য ৪০০ টাকা, দুটির জন্য মাত্র ৮০০ টাকা খরচ হয়।
রামেকের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচশ রোগী এই পরীক্ষা করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, মেশিনটির সফটওয়্যারে সমস্যা হয়েছে। অথবা প্রিন্ট মেশিনে লাগানো পিসির বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি যন্ত্রটির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি লিখে জানিয়েছি। তবে ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা আসতে বিলম্ব করছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহম্মেদ বলেন, মেশিনটি মেরামত করার জন্য যে প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া, তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।