• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ১লা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

লক্ষ্মীপুর চৌরঙ্গী জামে মসজিদ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ: শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩ ৮:৪৮

লক্ষ্মীপুর চৌরঙ্গী জামে মসজিদ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: নিয়মবর্হিভুত ও ইসলামী বিধিবিধান লঙ্ঘন করে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর চৌরঙ্গী জামে মসজিদ নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে এই মসজিদের বর্তমান কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে দোকানঘর বরাদ্দের নামে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে নেয়া, মসজিদের টাকা নয়ছয়, হিসাব প্রকাশ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি আরডিএ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে এ মসজিদটি।

শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর এক রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন লক্ষীপুর চৌরঙ্গী জামে মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা। লিখিত বক্তেব্যে এ মসজিদের সাধারণ মুসল্লি আমিনুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর চন্ডীপুর মৌজার কাজীহাটা মহল্লায় অবস্থিত পপুলার ডায়াগনিষ্টক সেন্টারের নতুন ভবন নিমার্ণের সময় ভারি পাইলিং এর কারণে পাঁচতলা বিশিষ্ট পুরাতন চৌরঙ্গী জামে মসজিদের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে। এতে মসজিদের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এতে পুরাতন মসজিদের ভবন ভেঙ্গে নতুন সাত তলা মসজিদ ভবনের নির্মাণাধীন কাজ শুরু করা হয়। যা চলমান। মসজিদটি নির্মাণের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে পপুলার ডায়গনিষ্টক সেন্টার কর্তৃপক্ষ তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করে। ওই টাকা হতে পাঁচ লাখ টাকায় মসজিদের পশ্চিম পাশে রবিউল আওয়ালের নিকট হতে ০.০৪৯৫ শতক জমি মসজিদের নামে গত ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারী ক্রয় করা হয়।

দলিলে মসজিদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সভাপতি ডা. ইকবাল বারী ও স্বাক্ষী হিসাবে স্বাক্ষর করেন আব্দুল কুদ্দুস ও শফিকুজ্জামান সুজন। বর্তমানে মসজিদের সম্পূর্ণ জমির পরিমাণ ০.১৮৭০ শতক। উক্ত পরিমাণ জমির উপর সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বর্তমান মসজিদ কমিটি মসজিদের নব নির্মাণাধীন কাজ চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, মসজিদ নির্মাণে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হতে কোন নকশা অনুমোদন নেয়া হয়নি। নকশা অনুমোদন ছাড়াই বর্তমান মসজিদ কমিটি চারতলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করেছে। মসজিদের প্রথম তলায় (যেখানে মসজিদের জন্ম লগ্ন থেকে সালাত আদায় হতো তদস্থলে) অবৈধভাবে ছাব্বিশটি দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি দোকান ঘরের পজিশন সত্তর-আশি লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। অথচ মসজিদের কোন অংশের পজিশন বিক্রি করার বিধান নাই।

আরও পড়ুনঃ  আরএমপির সাইবার ইউনিটের সহায়তায় উদ্ধার ৪৯ টি মোবাইল হস্তান্তর

কমিটির অনেকের নামে দোকানঘর বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। এমনকি কমিটির সভাপতি ইকবাল বারিও তার স্ত্রী তানজিলা আলমের নামে দোকানের পজিশন নিয়েছেন। ইসলামী শরিয়া বিরোধী একজন হিন্দু সম্প্রদায় লোকের কাছেও আশি লাখ টাকায় একটি পজিশন বিক্রি করেছে।

দেশে সনামধন্য বহু মুসলিম ইঞ্জিনিয়ার থাকার পরেও প্রশান্ত কুমার নামের ভিন্নধর্মীয় ব্যক্তিকে মসজিদ নিমার্ণের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মসজিদের কাজ শুরুর পূর্বে আল-আকসা ডেভেলোপারের মালিক সালেহুর রহমান শুধুমাত্র নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য ও মিস্ত্রি খরচের টাকায় বিনালাভে স্বল্পমূল্যে মসজিদ নির্মাণের দায়িত্ব নিতে চাইলে মসজিদ কমিটির সভাপতি ইকবার বারী, সহসভাপতি শফিকুজ্জামান সুজন, সাধারণ সম্পাদক আনাসারুল হক খিচু, সহসম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, মাসুদ রানা ও রফিকুল ইসলাম তা দেয়নি।

বরং তড়িঘড়ি করে তাদের নিজের লোক দিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এছাড়াও এযাবৎ পর্যন্ত মসজিদের কোন আয় ব্যয়ের হিসাব সাধারণ মুসল্লিদের দেননি এই কমিটির সদস্যরা। যদিও প্রতিমাসে মসজিদের আয় ব্যয়ের হিসাব চার্ট আকারে জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করার বিধান রয়েছে। সঠিকভাবে অডিটের মাধ্যমে তদন্ত করা হলে তাদের অর্থ লোপাটের পরিষ্কার চিত্রটি সামনে এসে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ মুসল্লিরা বলেন, তাদের অপকর্মের ব্যাপারে জানতে চেয়ে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। এতে মসজিদ কমিটির লোকজন প্রভাব ঘাটিয়ে ও তাদের কাজে বাঁধা দিলে পরিণতি ভালো হবে না, মর্মে আমাদেরকে হুমকি প্রদান করেছে।

আরও পড়ুনঃ  দুর্গাপুরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী দেবে জামায়াত

এ অবস্থায় সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বরাবরে তাদের অবৈধ ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজের কুফল উল্লেখপূর্বক কাজ বন্ধ রাখা ও সবার সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য ৭জুন লিখিত আবেদন এবং ওই একই তারিখে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাবরে দোকানঘর বিহীন মসজিদের সঠিক নকশা অনুমোদন দেবার জন্যও অনুরূপ আবেদন করা হয়। এতে করে তারা কমিটির লোকজন সাধারণ মুসল্লিদের উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

গত ১৪ জুন শফিকুজ্জামান সুজন মসজিদের গেটের সামনে মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি আমিনুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। তারা মুসল্লি আমিনুর রহমানকে বলে “তুই এ মসজিদে আর আসবি না, আসলে তোর হাত, পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেব” বলে হুমকি দেয়। পরে তিনি রাজপাড়া থানায় গিয়ে তার বিরুদ্ধে জিডি করেন।

জিডির প্রেক্ষিতে থানার ওসি এস.আই মজনু মিয়াকে ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেন। কিন্তু এসআই মজনু মিয়া ঘটনার পর হতে একমাস অতিবাহিত হলেও কোন তদন্ত না করেই চুপচাপ আছেন। এলাকার সাধারণ মুসল্লিগণসহ জনসাধারণ আমাদের আবেদনের সঙ্গে একাত্ত্বতা ঘোষণা করে আবেদনে স্বাক্ষর করা চালু রাখায় তারা অতিমাত্রায় ক্ষীপ্ত হয়ে ১৭জুলাই মাগরিবের নামাজ শেষে মসজিদ হতে আমিনুর রহমান ও তার ছেলে বের হলে মসজিদের গেটের সামনে আসলে তাদের দুজনকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ইকবাল বারীর নির্দেশনায় শফিকুজ্জামান সুজন, আনসারুল হক খিচ্চু, মাসুদ খান রানা ও রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাসী কায়দায় চড়াও হয়ে মারধর করে।

আরও পড়ুনঃ  নগরীতে অপারেশন ডেভিল হান্টে ৪ জনসহ অন্যান্য অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩৫

মসজিদের গেটে দাঁড়িয়ে ইকবাল বারী তাদেরকে নির্দেশ দিতে থাথে, বলে “ওদেরকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে গুম কর, যত টাকা লাগে আমি দিব। কিন্তু জনসাধারণের সরাসরি বাধার কারণে গুম করা সম্ভব হয় নি। তাদের উপর্যুপরি মারপিটের আঘাতে আমরা জখম হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা নেয়ার পর মামলা করার জন্য রাজপাড়া থানায় গেলে ওসি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে গত ২০জুলাই রাজশাহী মহানগর মেট্রোপলিটন আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।

মসজিদের অবৈধ কাজ বন্ধের জন্য নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রাজশাহী সদর সিনিয়র জর্জ আদালতে ২৭ জুলাই আরেকটি সিভিল মামলা করা হয়। এই মামলায় কোর্ট বিবাদিদেরকে শোকজ নোটিশ জারি করে। বিবাদিরা প্রভাবশালী হওয়ায় কোর্টের হুকুম তামিলে বিলম্ব হচ্ছে। মামলা উঠিয়ে নেবার জন্য তারা অহরহ হুমকি প্রদান করেছে। এমনকি তাদের সমস্ত অপকর্ম ঢাকার জন্য আমাদেরকে জামাত শিবিরের ট্যাগ লাগানোর মিথ্যে কূটকৌশল অবলম্বন করে নোংরা রাজনীতির খেলায় মেতে উঠেছে ।

ইসলাম বিরোধী কোন কাজ সংঘঠিত হলে প্রতিটি মুসলমানের কলিজায় রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়ে যায় । ক্ষেত্রেও ওই একই ঘটনা ঘটায় আমরা প্রতিবাদী না হয়ে থাকতে পারছি না। আল্লাহর ঘর মসজিদ কলুশমুক্ত ও পবিত্র রাখার স্বার্থে মসজিদের নামাজের স্থান হতে দোকানঘর অপসারণ করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের দ্বায়িত্ব থেকেই আমরা প্রতিবাদ করছি।

এসময় ওই মসজিদেও মুসল্লিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, আরিফ উদ্দিন, সাদেম আলী, নজরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, সুলতান আলম সেলিম, জালাল উদ্দিন আহমেদ, আ. রহিম, শহিদুল ইসলাম, ফায়াজ উদ্দিন, নজরুল ইসলামীসহ আরো অনেকে।

সর্বশেষ সংবাদ

এলো মাহে রমজান, হিজরি ১৪৪৬
শনিবার, মার্চ ১, ২০২৫ ৭:১৮
চাঁদ দেখা গেছে, রোজা শুরু রোববার
শনিবার, মার্চ ১, ২০২৫ ৭:১৮
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675