স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে বর্নাঢ্য আয়োজনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাজশাহীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন ও সরকারি-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি পালন করেছে।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট মূলত ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্টেরই একটি পুনরাবৃত্তি ঘটনা। সেদিন যারা বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করতে সমর্থ হয়। তারা বঙ্গবন্ধুকে স্বশরীরে হত্যা করে। কিন্তু তার জ্ঞান, চিন্তা, ত্যাগ সেটা সূর্যের মতো দেদীপ্যমান হয়ে আমাদেরকে আলোকিত করে চলেছে। জননেত্রীকে সেদিন তারা হত্যা করতে পারে নি। পরবর্তীতে ১৯৮১সালে এদেশে ফিড়ে এসেছিলেন এবং যার মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু ২০০৪ সালে তার উপর নারকীয় হামলা হয়েছিল। কাজেই আমরা বুঝতে পারি ২০০৪ সাল দেশের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিলো! কি এক নারকীয় সময়, কি এক পৈশাচিক সময়! জামায়াত-বিএনপি সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চায় নি। তারা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য একটি বড় হুমকি।
বক্তরা আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট যেটি হয়েছে, সেটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। সে সময় রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে এই সন্ত্রাস ঘটেছিল। যা পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও নেই। আধুনিক রাষ্ট্রের সংজ্ঞাতে এ জাতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে স্বীকৃতি দেয় না। বিগত এক যুগের বেশি সময় ধরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নকামী রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে তিনি হাঁটছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের মুক্তি, বাঙালিদের মুক্তি এবং বাংলা ভাষার মুক্তির নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ স্বাধীনতা চেতনায় বিশ্বাসী যারা সেদিন উপস্থিত ছিলেন, তাদের স্বমূলে ধ্বংস করে দেশকে পাকিস্তানি পন্থায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় যারা রত ছিলেন, তারাই এঘটনার সাথে জড়িত ছিল, এটা প্রমাণিত হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ : দিবস উপলক্ষ্যে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিকাল ৪.৩০টায় নগরীর জয় বাংলা চত্বর থেকে বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি ডা: তবিবুর রহমান শেখ। সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সদস্য ডা: আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা: ফ ম আ জাহিদ, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ ডলার, সদস্য হাবিবুর রহমান বাবু, নজরুল ইসলাম তোতা, শাহাব উদ্দিন, এ্যাড. শামসুন্নাহার মুক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: আব্দুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, হাফিজুর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম, ইউনুস আলী, মোখলেশুর রহমান কচি, এ্যাড. রাশেদ-উন-নবী আহসান, কে এম জামান জুয়েল, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, শাহ্মখদুম থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাদত আলী শাহু, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালাম রেজা, সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডা: সিরাজুম মুবিন সবুজ প্রমুখ।
জাতীয় শ্রমিক লীগ : শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগর বিকালে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অংশ গ্রহন করে। নেতৃত্ব দেন জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগর শাখার মান্যবর সভাপতি আলহাজ্ব ওয়ালী খান। উপস্থিত ছিলেন, মহানগর শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি এসএম আবদুল হান্নান, সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান মন্টু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজাহার আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনুল হক,সহ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিক এলাহি, হুমায়ুন কবির স্বপন প্রমুখ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : বেলা ১১টায় রাবি’র সিনেট ভবনের সামনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
মানববন্ধনে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক এএইচ এম কামরুল আহাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম, প্রগতিশীল শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক আব্দুলাহ আল মামুন, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরন্জিত মহলদার, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বক্তব্য দেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ : সকাল ১১টায় রাজশাহী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যৌথভাবে এক শোক সভার আয়োজন করে। মহানগর ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং জেলা সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কে.এম.এম. ইয়াছিন আলী মোল্লার সঞ্চালনায় ঐদিন সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে চলমান মামলায় দোষিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতা বাস্তবায়ন মঞ্চের সেক্রেটারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, পবা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান, রাজপাড়া থানা সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা হুমায়ূন কবির প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা সাবেক সহকারী কমান্ডার (দপ্তর) বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, বোয়ালিয়া থানা সাবেক কমান্ডার মোতাহার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী এস. মনিরুল ইসলাম জোহা, সেক্রেটারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ূবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা যতিন কুমার দাস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ চৌধুরী (আয়কর) প্রমুখ। সভা শেষে গ্রেনেড হামলায় শাহাদৎ বরণকারী মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভী রহমানসহ সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
বিএমডিএ : শহিদের স্বরণে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বরেন্দ্র সম্মেলন কক্ষে শহিদের স্বরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী জনাব আব্দুর রশীদ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতি: প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হোদা, অতি: প্রধান প্রকৌশলী ড. মো আবুল কাসেম, অতিঃ প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরীফুল হক, বিএমডিএ সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিবির আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ.টি.এম মাহফুজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুমন্ত কুমার বসাক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাজিরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জীন নুরাইন খান প্রমুখ। এসময় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।