স্টাফ রিপোর্টার : তীব্র জনবল সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড। রাষ্ট্রায়াত্ব এই প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৮১টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১৫২ জন। শূন্য রয়েছে ৪২৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ। ফলে কর্মরতদের এখন একাধিক দায়িত্বে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে কোন দায়িত্বই ঠিকমতো পালন করা যাচ্ছে না বলে নাম প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অনেক আগেই রাজশাহী অঞ্চলে তুঁত চাষের মাধ্যমে রেশমের বিকাশ লাভক করে। এখানেই খাঁটি রেশম সুতা দিয়ে কাপড় তৈরি শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ নাটোরের উত্তরা গণভবনে এসে রেশম কাপড় দেখে অভিভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিনই তিনি রেশম শিল্পের আরও বিকাশ ও সম্প্রসারণের জন্য দিকনির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড। এর প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে। রেশম বোর্ডের পাশাপাশি এখানে রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং সরকারি রেশম কারখানাও আছে। অবশ্য বিএনপি সরকারের আমলে রেশম কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালে রেশম কারখানাটি পুনরায় চালু করা হয়েছে। কারখানাটি এখন চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। জনবল সংকটের কারণে একই অবস্থা দাঁড়িয়েছে রেশম বোর্ডেরও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখানে শুধু প্রথম শ্রেণির পদের সংখ্যাই রয়েছে ৮৪টি। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ২৫ জন। প্রথম শ্রেণির ৫৯টি পদ খালি থাকায় প্রশাসনিক নানা কাজেই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এখানে দ্বিতীয় শ্রেণির অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৭২টি। তবে কর্মরত আছেন মাত্র ১৮ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৫৪টি। রেশম বোর্ডে তৃতীয় শ্রেণির মোট পদ ৩৬৭টি। বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৯০ জন। শূন্য রয়েছে ২৭৭টি পদ। চতুর্থ শ্রেণির ৫৮ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৯ জন। চতুর্থ শ্রেণির শূন্য পদ ৩৯টি।
রেশম বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, ২০১৩ সালের পর থেকে এখানে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ হয়নি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন। ফলে দিন দিন শূন্য পদের সংখ্যা কেবল বেড়েছেই। ফলে এক কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্বে অন্য দায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে। এতে কোন কাজই ঠিকমতো এগোচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (অর্থ ও পরিকল্পনা) ড. এম এ মান্নান বলেন, ‘বোর্ডে জনবল সংকট এখন প্রকট হয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়ার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের কথা সরকারকে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে জনবল নিয়োগের নির্দেশনা এলেই সংকটের সমাধান হতে পারে। যতদিন তা না হচ্ছে ততদিন এভাবেই সংকটের মধ্যে সবাইকে কাজ করতে হচ্ছে।’