• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

আম রফতানি বেড়ে দ্বিগুণ

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৯:৫৭

আম রফতানি বেড়ে দ্বিগুণ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী থেকে গত ২৬ আগস্ট প্রথমবারের মতো আম রফতানি হয়েছে ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ায়। ২০০ কেজি গৌরমতি, ১০০ কেজি কাটিমনসহ মোট ৩০০ কেজি আম এয়ার আরাবিয়ার জি৯-৫১৭ ফ্লাইটে করে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তিন বছরের প্রচেষ্টার পর একটি কোম্পানি এই আম রফতানি করে। এভাবে প্রতিবছরই সম্ভাবনাময় আম রফতানিতে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন দেশ। রাজশাহী অঞ্চলে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে আম রফতানি হয়েছে এবার। রফতানির মাধ্যমে আমের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।

আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলায় (রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর) চলতি অর্থবছরে আম উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ মেট্রিক টন। যেখানে মোট বাণিজ্যের আশা সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশে রফতানির টার্গেট আড়াই হাজার মেট্রিক টন। তবে চলতি মৌসুমের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) ৪৫২ দশমিক ১৫ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছে। যা গত বছর ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২২২ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন।

দফতরটির তথ্যমতে, এ অঞ্চলের আম চলতি মৌসুমে ১৭টি দেশে রফতানি হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১২টি। নতুন করে ৫টি দেশে এ বছর আম রফতানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ইতালি, হংকং, ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড, দুবাই, বাহরাইন, কাতার, ইউরোপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, লন্ডন, কুয়েত, নেদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও রাশিয়ায় আম রফতানি হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  অপারেশন ডেভিল হান্ট: সারাদেশে আরও ৫৮৫ জন গ্রেপ্তার

তথ্য বলছে, আম্রপালি জাতের আম সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে। আর রফতানিতে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নওগাঁ, তৃতীয় স্থানে রাজশাহী। নাটোর থেকে কোনও আম রফতানি হয়নি। আর চুক্তিবদ্ধ ৫৩ জন উৎপাদনকারী এই আম রফতানি করেছেন।

বাঘার আম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম ছানা জানান, তিনি কয়েক বছর ধরে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন করে আসছেন। এই আম উৎপাদনে খরচ বেশি। পরিচর্যাও বেশি নিতে হয়। কারণ, এই আম রফতানিকৃত দেশের শর্ত মেনে উৎপাদন করতে হয়। এ বছর তার উৎপাদন করা আম ইতালিসহ কয়েকটি দেশে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কুন্দুয়া গ্রামের চুক্তিবদ্ধ আমচাষি নাজিম উদ্দিনের বাগান থেকে সংগ্রহ করে প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় আম রফতানি করা হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এমটিবি অ্যাগ্রো অ্যান্ড গার্ডেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহতাব আলী জানান, রাশিয়ায় আম রফতানি করা সহজ ছিল না। অনেক প্রচেষ্টার পরে সম্ভব হয়েছে। এই আম রফতানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল রাশিয়ার জুড়ে দেওয়া শর্তগুলো পূরণ করা। তারা আমের মিষ্টতা, আকার সবকিছু শর্ত অনুযায়ী নিয়েছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেন্তেভিচ মানটিটস্কি এ বিষয়ে আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। তবে রাজশাহীতে প্যাকেজিং হাউজ ও টেস্টিং ল্যাব থাকলে রফতানি প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হতো।

আরও পড়ুনঃ  এইচটিআই এর স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প পরিচালনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক জানান, দেশের অন্যান্য জেলা ও দেশের বাইরে বাজারজাতকরণে আমে জিআই ট্যাগ ব্যবহার, জেলায় প্যাকেজিং হাউজ তৈরি করা জরুরি। আমরা জানি, নেদারল্যান্ডে কোনও আম উৎপন্ন হয় না, কিন্তু তারাই বিশ্বের দ্বিতীয় আম রফতানিকারক দেশ। অথচ আমাদের সব উপাদান ও প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি পেলে রফতানিতে মাইল ফলক সৃষ্টি করবে আম।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, এ অঞ্চল থেকে শুধু আম নয়, আম প্রক্রিয়াজাত করে পণ্য উৎপাদন ও রফতানি এবং আমের বাইপ্রোডাক্ট রফতানির প্রচুর সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন। একই সঙ্গে এখানে প্যাকেজিং হাউজ ও টেস্টিং ল্যাব স্থাপন সময়ের দাবি। এছাড়া কার্গো বিমান চালুরও দাবি করে আসছি। দীর্ঘ সময় ধরে এসব দাবি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারকে জানানো হচ্ছে। দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে আম রফতানি আরও বাড়বে। আশা করি দ্রুত এর সমাধান আসবে।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উদযাপন

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মাজদার হোসেন বলেন, এবার শুরুতেই রাজশাহী থেকে বিদেশে আম রফতানি হয়েছে। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম পাড়ার প্রথম দিনেই গুটি জাতের আম বাঘা থেকে ইতালিতে রফতানি হয়েছে। আম রফতানিতে এখানে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে, যেটা সামনে আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন, প্রতি বছরই আম রফতানি বাড়ছে। আমদানিকারক দেশগুলোর শর্ত অনুযায়ী আম রফতানি করতে হয়। এ কারণে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তবে প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে রাজশাহীতে এবার আড়াই হাজার মেট্রিক টন নিরাপদ আম অর্থাৎ রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন হয়েছে। রফতানির মাধ্যমে আমের অর্থনীতি টেকসই হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে আমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া এ অঞ্চলের আম স্বাদের দিক দিয়ে অন্য দেশগুলোর চেয়ে টেস্টি। এ কারণে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশকেই ব্র্যান্ডিং করছে ‘আম’।

তিনি আরও বলেন, আম রফতানির বিষয়টি এখন খুবই আলোচিত। নতুন নতুন ব্যবসায়ী এটার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। সুতরাং এখন আর আম রফতানি নিয়ে পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। আর চলতি মৌসুমে আম এখন রফতানি হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ওএসডি হলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৮২ কর্মকর্তা
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১১:৩৯
ভাঙ্গা ওরিয়েন্ট ক্লাবের কমিটি গঠন
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১১:৩৯
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675