স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদের তিন বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালত-১ এর বিচারক মারুফ আল্লাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আবু সাঈদ চাঁদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, জেলার চারঘাট উপজেলার বামুনদিঘি চকঝিরা টেকনিক্যাল স্কুলের নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মামলার বিবাদীগণ পরস্পর যোগসাজশে ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। ঘটনাটি ২০০৭ সালের। উপজেলার চকগোচর গ্রামের মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি আদালতে এই মামলাটি করেন। তখন আবু সাঈদ চাঁদ শলুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।
তাঁকে মামলার এক নম্বর বিবাদী করা হয়। অপর দুই বিবাদীর একজন ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলিম উদ্দিন। অপরজন নাওদাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ওয়াজ নবী। তিনি ঘটনার সময় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন। টাকা দেওয়ার পরে চাকরি না পেয়ে প্রতারিত হয়ে ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা প্রথমে থানায় মামলা করতে যান। থানায় মামলা না নিলে তারা আদালতে মামলা করেন বলে আরজিতে বলা হয়েছে।
এই মামলা রোববার বিকেলে রায় ঘোষণা করা হয়। মামলা আসামিপক্ষের আইনজীবী পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন, তারা ন্যায় বিচার পাননি। তারা উচ্চাদালতে যাবেন। তিনি বলেন, তার মক্কেল এই আদালতে ন্যায় বিচার পাবেন না এই মর্মে তারা আদালত পরিবর্তন করার জন্য দুই দফা উচ্চাদালতে আবেদন করেছেন। এছাড়া মামলাটি বাদী বিবাদীর মধ্যে মীমাংসা হয়ে গেছে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র আদালত দাখিল করা হয়েছে। আদালত তা আমলে না নিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন।
এ ব্যাপারে আদালতের অতিরিক্ত পিপি আহসান হাবীব বলেন, এই মামলায় মোট ভিকটিম ২২ জন। তাদের মধ্যে বাদী শুধু একজন। তিনি আপোষ করেছেন। কিন্তু অন্যেরা সংক্ষুব্ধ ছিলেন। দুইজন সংক্ষুব্ধ ভিকটিম মামলা চালানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত সেটা মঞ্জুর করেছেন। তাছাড়া এ আপোষনামা বিবেচনায় নেওয়া বা না নেওয়ার ব্যাপারে উচ্চাদালতের সিদ্ধান্ত রয়েছে। তিনি বলেন, মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের জন্য তারা যে আবেদন করেছিলেন তা উচ্চাদালত খারিজ করে দিয়েছেন।
গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে একটি জনসভায় বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার কারণে পুঠিয়া থানায় মামলা হলে তাকে ২৫ মে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য জেলায় আবু সাঈদ চাঁদের নামে মোট ২৭টি মামলা হয়। এ সব মামলায় তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ৭৩টি মামলা চলমান রয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়।