স্টাফ রিপোর্টার: ‘ছল পোঁল কেই নাই, দুই জনের সংসার । উনি কামে গেছেন আমি সারাদিন এই ঠুকরির ভেতরে থাকি। এই গরিব অসহায়ের ভাগ্যে জুটেঁনি একটা ঘর। শুনছি কত মানুষ ঘর পাইছে কিন্তু আমাগো কি সরকার একখান কইরে দিবে না। সরকারের কাছে কিছু না শুধুমাত্র একটা মাথা গোজাঁর ঠাঁই চাই বাবা’।
আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন ৫৩ বছর বয়সী মারিয়া মার্ডী। মারিয়া এবং তার স্বামী ললিত বসবাস করেন নওহাটা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের দুয়ারি গ্রামে। অন্যের আমবাগানে পলিথিন এবং বাশেঁর কঞ্চি দিয়ে বেড়া বানিয়ে তাদের বসবাস এই ঘরে। ভূমিহীন মারিয়া মার্ডী নওহাটা পৌরসভার খ্রীষ্টানপাড়া, সন্তোষপুরের শিবু মার্ডীর মেয়ে।
মারিয়া এবং ললিত দম্পতির সন্তান নেই। আগে অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করলেও এখন বয়সের ভারে আর কাজে যেতে পারেন না মারিয়া । স্বামী ললিত সারাদিন ফসলের মাঠে অন্যের জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে যে উপার্যন করে তা দিয়ে দুইজনের সংসারে ব্যায় মিটিয়ে বাড়তি সঞ্চয় কিছু থাকে না।
এতে করে বর্তমান সময়ে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করা তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। মারিয়া জানান তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে একটি ঘরের আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত ঘর পাননি। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দফতরে কয়েকবার ঘুরলেও তার কথা কেউ কর্ণপাত করে না বলেও অভিযোগ মারিয়ার। তবে তিনি জানান, যে কোনো জায়গায় একটি ঘর দেওয়া হলে তিনি সেখানেই বসবাস করতে রাজি। শুধু একটি ঘর দরকার।
প্রতিবেশী মাহবুবা নামে একজনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মারিয়া ও তার স্বামী এইখানে দীর্ঘ দিন থেকে বসবাস করে আসছে। সমস্যা হচ্ছে, যে বাগানে বসবসা তার মালিক এই জায়গাটি ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলবে এবং এইখানে যতগুলো বসতি আছে মারিয়া সহ তাদেরকে দ্রুত সময়ের ভেতরে অন্য জায়গায় চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। এখন এই গরিব অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে। কে দিবে তাদেরকে আশ্রয়।
এই বিষয়ে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকারকে অবগত করা হলে তিনি মারিয়া মার্ডীকে আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে একটি বাড়ি দিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে অসহায় মারিয়া মার্ডীর কথা জানতে পারলাম। তবে এই কথাটি যদি কয়েকদিন আগে জানতে পারতাম যখন আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিচ্ছিলাম তখন ভালো হতো । তবে এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার যদি কোনো সুযোগ থাকে তাহলে সেখান থেকে তাকে একটি ঘর দেওয়া হবে।