মঈন উদ্দীন: বুধবার রাত ১০টার পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানিয়েছে রাজশাহীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক। এদিকে, টানা বর্ষণে নগরীর অধিকাংশ এলাকায় ড্রেনের পানি সড়কে উঠে আসে। নোংরা পানি নিচু এলাকার বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়ে। এতে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এমনকি রামেক হাসপাতালের প্রধান সড়কসহ হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর সংযোগ সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ভারি ও টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার এই চিত্র শুধু যে রাজশাহী নগরীতে, তা নয়। রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নিম্ন এলাকায়তেও জলাবদ্ধতায় সহস্রাধিক বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। অবশ্য বেশকিছু এলাকায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমেও গেলেও অধিকাংশ এলাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচেছ নগরবাসীকে।
রাজশাহীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের বেশ কয়েকদিন থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কখনো হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে ২৪ ঘণ্টায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড এই প্রথম। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, গতকাল বুধবার (৪ অক্টোবর) রাত ১০টার আগে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫ মিলিমিটার। একই দিন রাত ১০টার পর থেকে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬১ মিলিমিটার। এখনো বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলো মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি বলতে বোঝায় ২৩ থেকে ৪২ মিলিমিটার। ভারী বৃষ্টি হলো ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার। আর বৃষ্টি যদি ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হয়, তবে তা অতি ভারী বৃষ্টি হিসেবে গণ্য হয়।
এতে নগরবিদরা বলেন, ভেবে দেখা দরকার, যদি ২৪ ঘণ্টা কিংবা ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? শহরের পুকুরগুলো ভরাট, ড্রেনগুলো অবৈধ দখল, পানিপ্রবাহ ঠিক না থাকা এবং পানি শোষণের জন্য উন্মুক্ত জায়গার অভাব অনাকাঙ্ক্ষিত এ জলাবদ্ধতার কারণ বলে জানিয়ে আসছেন তারা।
নগরবিদরা বলেন, আবার জলাবদ্ধতার দায় শুধু কর্তৃপক্ষকে দিলেও চলবে না, নগরবাসীরও এক্ষেত্রে কিছু দায়িত্ব আছে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ড্রেনের স্বাভাবিক প্রবাহ যেন ব্যাহত না হয়, নগরবাসীকে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। এজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি প্রকৌশলী ও নগরবিদদের সমন্বয়ে জলাবদ্ধতা সংকট সমাধানে সিটি করপোরেশন কার্যকর উদ্যোগ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।