স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে অতি ভারী বর্ষণের খাল ও পুকুর প্লাবিত হয়েছে। এইসব খাল ও পুকুরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে বৃষ্টির পানিতে। সে মাছ ধরতে নগরীর বড় বড় ড্রেনগুলোতে জাল ফেলছেন অনেকেই। জালগুলোতে ধরা পড়ছে রুই, কাতলা, টেংরা, গুচি, কই মাছ, তেলাপিয়া, জিওল ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরে বুধপাড়া এলাকায় খেয়া জাল দিয়ে কয়েকজনকে মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। তারা জানান, বৃষ্টিতে ভিজে সকাল থেকে তারা মাছ ধরছেন। অপরদিকে ১৬১ মিলিমিটারের অতি ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় নগরীর বেশ কিছু এলাকার সড়কে পানি জমে গেছে।
নগরীর বুধবার এলাকার বাসিন্দা মনি বলেন, আমাদের এই ড্রেন দিয়ে তালাইমারী, কাজলা, বিনোদপুর, মির্জাপুর, ধরমপুর এলাকার পানি নামে। অন্যদিকে নতুন বুধপাড়া, পশ্চিম বুধপাড়া, মেহেরচন্ডি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), রাবির স্টেশন এলাকার পানি নামে। ফলে ওই এলাকার ছোট-বড় পুকুর ও ডোবাগুলো বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে মাছগুলো ড্রেনে ঢুকে গেছে। সকাল থেকে অনেকেই এসে মাছ ধরছে।
খেয়া জাল দিয়ে মাছ শিকার করা শফিকুল জানান, সকালের দিকে ভালো মাছ পাচ্ছিলাম। এখানে তিনজন আলাদা আলাদা জালে মাছ ধরেছি। সবাই আড়াই থেকে তিন কেজি করে মাছ পেয়েছে। কেউ কেউ আবার বিক্রিও করেছে। অনেকদিন পরে এমন ভাবে মাছ ধরলাম। ড্রেনে পানি থাকল এমনভাবে বেশ কয়েকদিন মাছ পাওয়া যাবে।
জাল পেতে মাছ ধরছেন শামসুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন জিওল, টেংরা, গুচি, কই মাছ। তিনি বলেন, পানি ঘোলা হলে তার জালে বেশি মাছ ধরা পড়ে। এই জালে সবচেয়ে বেশি মাছ পড়ে রাতে। রাতে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পানি ঘোলা হয়ে যাবে। এতে করে বেশি মাছ পড়বে। টেংরা, কই মিলে ১ কেজির মতো মাছ পেয়েছি।
একই ড্রেনের মোহনপুর এলাকায় জালে মাছ ধরছেন আজগর। শফিকুল ও শামসুলের তুলনায় তিনি বেশি মাছ পেয়েছেন। তিনি সবচেয়ে বেশি তেলাপিয়া এবং বাটা মাছ পেয়েছেন। তেলাপিয়া মাছগুলো বিক্রি করলেও বাটা মাছগুলো তিনি নিজের ধানের জমিতে ছেড়েছেন। কারণ বৃষ্টির ফলে তার জমির ধানগুলো তলিয়ে গেছে। তিনি ধরেই নিয়েছেন এখানে আর ধান হবে না। তাই বিকল্প হিসেবে মাছ চাষ করছেন।
আজগর বলেন, আবহাওয়া খারাপ দেখে বুধবার রাতে জাল ফেলেছিলাম। রুই, কাতলসহ ৮ থেকে ১০ কেজির মতো মাছ। কিছু বাড়িতে রেখেছি, প্রতিবেশীদেরও দিয়েছি। সব থেকে বেশি মাছ ধানের জমিতে ছেড়েছি। বড় হলে সে মাছগুলো ধরে আবার বিক্রি করতে পারবো।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, বুধবার রাত ১০টার পর থেকে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬১ মিলিমিটার। এখনো বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃষ্টি এখনো হচ্ছে। খাল ও পুকুরে প্লাবিত হয়ে গেছে। মাঠে আমাদের লোকজন কাজ করছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।