অনলাইন ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা ভেন্যুর খেতাব পেয়েছিল কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। ঢাকার অদূরে এই জেলা স্টেডিয়াম গত মৌসুমে হোম ভেন্যু ছিল ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডানের। এক মৌসুম বসুন্ধরা কিংসেরও হোম ছিল। সুন্দর মাঠ, সমর্থক, যাতায়াত সব কিছু বিবেচনায় কুমিল্লা ফুটবলের ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃত ছিল এটি। কিন্তু এই ভেন্যুতে আসন্ন মৌসুমে আর ম্যাচ গড়াবে না।
বাফুফের প্রধান ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সংস্কারধীন। তাই গত দুই মৌসুম বসুন্ধরা কিংস এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা স্টেডিয়ামে খেলা পরিচালনা করেছে বাফুফে। জেলা স্টেডিয়ামগুলোর নিয়ন্ত্রণ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধিভূক্ত জেলা ক্রীড়া সংস্থার। কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ক্রিকেট পীচ স্থাপন করেছে। তাই চলতি মৌসুম ফুটবল খেলা পরিচালনা সম্ভব নয়।
কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রোমেন বলেন, ‘চার মৌসুম কুমিল্লায় ঘরোয়া ফুটবল লিগ হয়েছে। এই জেলার ক্রিকেট লিগ আমরা আয়োজন করতে পারিনি ফুটবলের জন্য। এবার ক্রিকেট লিগ আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে পীচ তৈরি করেছি। মার্চের পর ফেডারেশন লিগ পরিচালনা করতে পারবে বিষয়টি অবহিত করেছি।’ যদিও ফেডারেশনের দাবি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে কুমিল্লা স্টেডিয়ামে লিগ পরিচালনার অনুমতি পত্র তাদের রয়েছে তন্মেধ্যেই পীচ নির্মাণ করেছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ২৭ অক্টোবর স্বাধীনতা কাপ শুরু হচ্ছে। ডিসেম্বর প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়াবে। মার্চের পর কুমিল্লা মাঠ পেলে বাফুফে আর প্রয়োজনীয়তা থাকছে না। তাই বাফুফে কুমিল্লার শহীদ ধীরন্দ্রেনাথ দত্ত স্টেডিয়ামকে বাদ দিয়েই টুর্নামেন্ট ও লিগ পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।
গত মৌসুমে কুমিল্লার শহীদ ধীরন্দ্রেনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে হোম ভেন্যু ছিল মোহামেডান ও আবাহনীর। বিভিন্ন সূত্রের খবর, কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের আচরণে খানিকটা অসন্তোষ দেশের দুই জনপ্রিয় ক্লাব। তাই আবাহনী এবার তাদের পুরনো ভেন্যু সিলেট এবং মোহামেডান নোয়াখালীতে ভেন্যু নেয়ার পরিকল্পনা করছে। প্রয়াত ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব বাদল রায় মোহামেডানের ভেন্যু কুমিল্লায় নিয়েছিল। বাদল রায়ের মৃত্যুর পরও মোহামডোন সম্মানার্থে কুমিল্লা ভেন্যু নিজেদের রেখেছিল। জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্মকর্তাদের আচরণ এবং মাঠের সামগ্রিক প্রেক্ষিতে তারা অন্য ভেন্যু খুজছেন বলে জানা গেছে। কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রোমেন অবশ্য আচরণগত বিষয়টি একটি ক্লাবের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমাদের এখানে চার মৌসুম খেলা হচ্ছে। অনেক দল এসে খেলেছে কোনো সমস্যা হয়নি। একটি বিষয়ে একটি ক্লাবের কর্মকর্তার (মোহামেডানের পরিচালক আবু হাসান চৌধুরি প্রিন্স) সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি বা দূরত্ব হয়েছিল।’
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে জেলা পর্যায়ের সকল খেলা খেলা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনেই পরিচালিত হয়েছে। ২০০৮ সালে ফিফার নির্দেশক্রমে বাফুফে জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে ফুটবলকে পৃথক করে আলাদ সংগঠন করে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন। জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন পৃথক সংগঠন হলেও মাঠ, অফিস সহ নানা বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপরই নির্ভরশীল। অনেক জেলায় ক্রীড়া সংস্থা ও ফুটভল এসোসিয়েশন দ্বন্দে খেলা হয় না। কুমিল্লায় সেটি নেই বলে দাবি রোমেনের, ‘আমি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও ফুটবল এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি। দুই সংগঠন একাতা রয়েছে। এখানে ঐ রকম কোনো সমস্যা নেই।’
গত মৌসুমে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ,মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লায় প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাফুফে ভেন্যু ব্যবস্থাপনায় থাকলেও ক্লাবগুলো হোম ভেন্যু হিসেবে একেক জেলাকে বেছে নেয়। বসুন্ধরা কিংস, শেখ রাসেল ছাড়া বাকি ক্লাবগুলো এখনো ভেন্যুর ব্যাপারে ফেডারেশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া স্বাধীনতা কাপ মুন্সিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ এবং কিংস অ্যারেনা আয়োজন করবে বাফুফে।