স্টাফ রিপোর্টার: টেনিস কোর্টে পাতা পড়ে। এই কারণে রাজশাহীর অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম টেনিস কমপ্লেক্সে কিছু গাছ হত্যা করা হচ্ছে। তাজা গাছগুলো মঙ্গলবার থেকে কাটা শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। গাছ হত্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই টেনিস কোর্টের খেলোয়াড়রা।
রাজশাহীর এই টেনিস কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেরও আসর বসে। কোর্টের বাইরের গাছগুলো দেশি-বিদেশী খেলোয়াড়দের ছায়া দেয়। টুর্নামেন্ট ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন বয়সী খেলোয়াড়রা এখানে সারাবছর টেনিস খেলেন। খেলোয়াড়রা বলছেন, কোর্ট থেকে পাতা পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে বলে গাছই কেটে ফেলা পরিচালনা পর্ষদের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
টেনিস কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে গাছ কাটা শুরু হলেই টেনিক কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ড নামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আপত্তি জানান সদস্যরা। মুশফিক পিটু নামের এক সদস্য প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, ‘টেনিস কমপ্লেক্সের গাছগুলো কাটা কতটা যৌক্তিক?’ যোগাযোগ করা হলে মুশফিক পিটু অবশ্য গণমাধ্যমে কোন বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেনিস কমপ্লেক্সে নিয়মিত খেলতে যাওয়া এক খেলোয়াড় বলেন, ‘গাছ কেটে ফেলা কোনভাবেই কাম্য নয়। এ রকম নয় যে গাছ কেটে টেনিস কোর্ট বড় করা হচ্ছে। শুধু গাছের পাতা গিয়ে কোর্টে পড়ে বলে গাছ কেটে ফেলা দুঃখজনক। গাছগুলো থাকলে হয়তো নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। এই কাজটি কর্তৃপক্ষ করতে চায় না বলে গাছ কাটা হচ্ছে। এখন তাদের মাথায় উঁকুন হলে কি তারা চুল ন্যাড়া করে ফেলবেন?’
বুধবার দুপুরে টেনিস কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, একটি আমগাছ ইতোমধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে। আরও তিনটি আম ও জাম গাছ কাটা হচ্ছে। শ্রমিকেরা জানান, যিনি গাছগুলো কিনেছেন, তারা তার হয়ে গাছ কাটতে এসেছেন। কত টাকায় গাছ বিক্রি করা হয়েছে তা তারা জানেন না।
জানতে চাইলে টেনিস কোর্টের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, কত টাকায় কয়টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে তা তিনি বলতে পারবেন না। তিনি শুধু জানেন, কয়েকটি গাছ বিক্রি করা হয়েছে।
টেনিস কমপ্লেক্স পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এহেসানুল হুদা বলেন, ‘কাল থেকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। সেক্রেটারী যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এই ক্ষমতা তার আছে। গাছ কাটার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন প্রশ্ন তুলছে, সাংবাদিকরা আসছে। এটা তো সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান নয় যে গাছ কাটা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘গাছের পাতা এসে টেনিস কোর্টে পড়ে। আমার কাছে গাছ আগে নয়, টেনিস কোর্টই আগে। সে জন্য চারটা গাছ কাটা হচ্ছে। ২২ হাজার টাকায় গাছগুলো বিক্রি করেছি। এতে আমি কি খুব অন্যায় করে ফেলেছি? আমি টেনিসের কোন ক্ষতি করলে স্বেচ্ছায় সরে যাব।’