স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে একরাতে দুই চিকিৎসক হত্যার কোন ‘ক্লু’ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। ঘটনার পর একদিন পার হলেও আলাদা দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ বলছে, ঘাতকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কৃষ্টগঞ্জ বাজারের নিজ দোকান থেকে পল্লী চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলালকে (৪৫) তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রাত ৯টার দিকে সিটিহাট এলাকায় তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এর তিন ঘণ্টারও কম সময় পর একই রাতে নগরীর বর্ণালী মোড় এলাকায় যৌন ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়। ডা. কাজেম ওই সময় চেম্বার থেকে ফিরছিলেন। দুটি ঘটনার সময়ই দুর্বৃত্তরা মুখে কাপড় বেঁধে মাইক্রোবাস নিয়ে এসেছিল।
নিহত ডা. কাজেম ছাত্রজীবনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। তিনি জামায়াতের অর্থদাতা ছিলেন। নিহত এরশাদ আলীরও জামায়াত সম্পৃক্ততা ছিল বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে তা অস্বীকার করেছেন তার ভাই নওশাদ আলী।
ডা. কাজেম হত্যার ঘটনায় সোমবার তার স্ত্রী ডা. ফারহানা ইয়াসমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেন। আর এরশাদ আলী হত্যার ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন তার ভাই রুহুল আমিন। এ দুই মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির রাজশাহী শাখা। এ সময় চিকিৎসকেরা কালো ব্যাচ ধারণ করে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। চিকিৎসকরা বলেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তারা শঙ্কিত। অবিলম্বে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা না আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. নওশাদ আলী।
একই রাতে দুই চিকিৎসক হত্যার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে আমরা সব ধরনের চেষ্টাই করছি। তবে এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। খুনিরা অচিরেই ধরা পড়বে বলে আমরা আশা করছি।’